শুক্রবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রাঙামাটির বরকলে সীমানা বিরোধের জেরে আহত-৪ : থানায় মামলা
রাঙামাটির বরকলে সীমানা বিরোধের জেরে আহত-৪ : থানায় মামলা
রাঙামাটি :: রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভুষনছড়ার মীরপাড়া নামক গ্রামে জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একই পরিবারের ৪ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৩০ আগষ্ট সোমবার সকালে ভুষনছড়া আমতলা সড়কে অবস্থিত ব্রীজের পূর্বদিকে বাদীর পিতার জমির নদী সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত মো. আব্দুল হালিমের কণ্যা সালমা আক্তার বাদী হয়ে বরকল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বরকল থানার মামলা নং ০১/২৪ তারিখ ০২ সেপ্টেম্বর- ২০২১। ধারা ১৪৩/ ৪৪৭/ ৩২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৩৫৪/ ৪২৭/ ৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) বরকল থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. মোজাম্মেল হক।
ঘটনায় আহতরা হলেন বাদী সালমা আক্তারের পিতা মো. আব্দুল হালিম (৫৬), মাতা কুলছুম বেগম(৫০), ভাই আশ্রাফুল (২২) ও শামীম (১৮)।
মামলার বিবাদীরা হলো ১। মো. আব্দুল হাই (৫৬) পিতা-মৃত সামসুদ্দিন, ২। মো. ইকবাল হোসেন (২৩) পিতা- আব্দুল হাই, ৩। আব্দুল লতিফ মিলন (৬১) পিতা- আবুল হাসেম, ৪। বুলবুলি আক্তার @ মনি (১৯) স্বামী মো. ইকবাল হোসেন সর্বসাং: ভুষণছড়া, মীরপাড়া, ৮ নং ওয়ার্ড, বরকল, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ও ৫। মো. আবুল কালাম আজাদ (৩৩) পিতা-শেখ হাবিবুর রহমান সাং-এরাবুনিয়া, বরকল, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
মামলার বিবরণে এজাহারে উল্লেখ্য, বাদির ভাষ্যমতে “ আমাদের বাড়ীর দক্ষিণ পাশে বিবাদীদের বাড়ী। তাহাদের সাথে বাড়ীর সীমানা নিয়ে দীর্ঘদির ধরে বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। এই সীমানা বিরোধের জের ধরে বিবাদীগণ আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও মিথ্যা মামলায় জড়ায়ে হয়রানি করার মানসিকতায় লিপ্ত আছে। ঘটনাস্থল বিবাদীদের জমির দক্ষিণ পাশে আমাদের আবাদী জমি। আমাদের জমির দক্ষিণ পাশের নদীতে বয়ে যাওয়া পানি নিষ্কাশনের একটি নালা রয়েছে। আমার পিতা মো. আব্দুল হালিমের জমির ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে বিবাদীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে ধারালো দা, লাঠি সোঠা, কোদাল ও ঝুড়িসহ প্রবেশ করত: জমি হইতে মাটি কাটিয়া নদীতে বয়ে যাওয়া পানি নিষ্কাশনের নালা ভরাত করিতে থাকে। যাহাতে আমাদের জমিতে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করিয়া নদী ভাঙনে জমি বিলিন হইয়া যায়। বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাহাদের অসৎ উদ্দেশ্য পূরন করার স্বার্থে আমাদের জমির মাটি কাটিটে থাকে। গত ৩০/০৮/২০২১ তারিখ সকাল আনুমানিক ৯.২৫ ঘটিকায় আমার পিতা ভুষনছড়া বাজার হইতে বাড়ী যাওয়ার সময় দেখিতে পান যে, বিবাদীগণ আমাদের জমির মাটি কাটিয়া ও ক্ষতি সাধন করিয়া নদীতে বয়ে যাওয়া নালা ভরাট করিতেছে। বিবাদীদের এমন অপকর্ম দেখিয়া আমার পিতা ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়া বিবাদীদের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় ১ নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পরপর দা এর কোপের আঘাতে (ক্রস কাটিং) মারাত্মক রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়। আমার পিতা জখমপ্রাপ্ত হইয়া মাটিতে লুটিয়া পরিলে ২ নং বিবাদী মো. ইকবাল হোসেন ও ৫ নং বিবাদী মো. আবুল কালাম আজাদ তাহাদের হাতে থাকা লাঠি ও কাঠের বাটাম দ্বারা মারপিট করিতে থাকে। তাহাদের লাঠির আঘাতে আমার পিতার বাম হাতের কব্জির উপর, বাম কাঁধে ও পিঠের বিভিন্নস্থানে কালশিরাযুক্ত নীলাফুলা জখমপ্রাপ্ত হয়। আমার পিতার চিৎকারে আমার মা কুলছুম বেগম ভাই আশ্রাফুল ইসলাম ও শামীম হোসেন দৌড়াইয়া বিবাদীদের কবল হইতে উদ্ধারের চেষ্টা করিলে ৩ নং বিবাদী আব্দুল লতিফ ও ২ নং বিবাদী মো. ইকবাল হোসেন তাহাদের হাতে থাকা লাঠির দ্বারা আমার ভাই শামীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। উক্ত আঘাত আমার ভাই শামীম বাম হাত দ্বারা ঠেকাইলে ৩ নং বিবাদী লতিফের লাঠির আঘাতে শামীমের বাম হাতের কব্জির হাড় ভেঙ্গে গুরুতর জখম হয় এবং ৪ নং বিবাদী বুলবুলি@ মনি আমার মা কুলছুম বেগমের চুলের মুঠি ধরিয়া টানাহেছড়া ও ৫ নং বিবাদী মো. আবুল কালাম আজাদ আমার মা কুলছুম বেগমে শাড়ি ধরিয়া টানাহেছড়া করিয়া বিবস্ত্র করিয়া শালীনতা হানি করে এবং ২ নং আসামীর লাঠির আঘাতে আমার মায়ের বাম পায়ের নীলাফুলা জখম হয়। আমার বাবা মা ভাইদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন উদ্ধারের জন্য আগাইয়া আসিলে বিবাদীগণ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে। বিবাদীদের আঘাতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় আমার বাবা ও ভাই স্থানীয়দের সহায়তায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পুরুষ বিভাগ ৯ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে এবং আমার ভাই রাঙামাটির একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এসময় সে রাঙামাটি অবস্থান করায় বাবা ও ভাইদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছি এবং তাদের মুখে ঘটনার বিস্তারিত শুনিয়া এজাহার দায়ের করেন।