বৃহস্পতিবার ● ২৬ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » জ্বালানি দূর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসেবে এদের বিচার দাবি
জ্বালানি দূর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসেবে এদের বিচার দাবি
ফুলবাড়ির শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সমাবেশে জালিয়াতি কোম্পানি এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশি প্রকল্প বাতিল এবং জ্বালানি দুর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসেবে এদের বিচার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ ২৬ আগস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলবাড়ি আন্দোলনের শহীদ তরিকুল, সালেহীন, আল-আমিন স্মরণে জাতীয় কমিটি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সংগঠক রুহিন হোসেন প্রিন্স। এসময় জাতীয় কমিটির সংগঠক সাইফুল হক, রাজেকুজ্জামান রতন, নজরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, ফকরুদ্দিন কবির আতিক, শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাচ্চু ভূঁইয়া, বেলাল চৌধুরী, মঈনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, মফিজুর রহমান লাল্টু, ডা. হারুন-অর-রশিদ, হুমায়ূন কবির, জাতীয় কমিটির ঢাকা মহানগর সংগঠক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, মুনীর উদ্দীন পাপ্পু, জুলফিকার আলী, আকবর খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ফুলবাড়িতে জনগণের আন্দোলনে বাধ্য হয়ে ঐ সময়ের সরকার চুক্তি করেছিল। ঐ সময় বিরোধীদলের নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ‘ঐ চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, চুক্তি না মানার পরিণতি হবে ভয়াবহ।’ কিন্তু দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও আজও চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সরকার বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে ঐ অঞ্চলে উন্মুক্ত খনি করার চক্রান্ত চলছে। এটা স্পষ্টত এই আন্দোলনের সাথে প্রতারণা। জনগণ কোনো চক্রান্ত মেনে নেবে না।
তিনি আরো বলেন, জিসিএম বাংলাদেশের কয়লা খনি দেখিয়ে লন্ডন শেয়ার বাজারে ব্যবসা করছে অথচ সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি জ্বালানি দুর্নীতির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত ও ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসেবে এদের বিচার দাবি করেন।
তিনি বলেন, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না। অবিলম্বে ফুলবাড়ি, রামপালসহ প্রকৃতি-পরিবেশ বিনাশি প্রকল্প বাতিল করতে। তিনি ফুলবাড়ী নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তিনি উত্তরবঙ্গসহ দেশের সর্বত্র সুলভে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহেরও দাবি জানান।
সমাবেশের পূর্বে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাসদ (মাকর্সবাদী), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, গণসাংস্কৃতিক ফ্রন্ট, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, গ্রীন ভয়েসসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি বর্গ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ফুলবাড়ির শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফুলবাড়ির কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদসহ নেতৃবৃন্দ যোগ দেন।
সমাবেশের শুরুতে ফুলবাড়ির শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ফুলবাড়িসহ দেশের সর্বত্র যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
উল্লেখ্য ২০০৬ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আন্দোলনরত জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর গুলি চালায়। এতে ৩ জন শহীদ হন ও শতাধিক আহত হন। ৩০ আগস্ট সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে চুক্তি করে। কিন্তু ঐ চুক্তি এখনও পূর্ণবাস্তবায়ন হয়নি।