বৃহস্পতিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » টিকা নিয়ে কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে মানুষ জিম্মী হতে পারে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ দাবি
টিকা নিয়ে কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে মানুষ জিম্মী হতে পারে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ দাবি
ঢাকা :: আজ সকালে আহুত সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দেশে করোনা টিকা নিয়ে মুনাফাকেন্দ্রীক যেকোন প্রকার ব্যবসা ও মধ্যস্বত্বভোগী রাখার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন এবং বলেছেন করোনার টিকা নিয়ে দেশের মানুষ কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে জিম্মি হতে পারে না। সরকারও কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্লাকমেইলের শিকার হতে পারে না। তিনি সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকা ভারতের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে আমদানি করার সমালোচনা করেন এবং বলেন, মধ্যস্বত্বভোগী হিসাবে বেক্সিমকো টিকা প্রতি কত মুনাফা করছে তাও জনগণ জানতে চায়। তিনি বলেন, বেক্সিমকো সরকারকে জিম্মি করে সরকারের কাছেও টিকা বিক্রি করবে, আবার আরও উচ্চমূল্যে খোলা বাজারেও টিকা বিক্রি করে বেশুমার মুনাফা হাতিয়ে নেবার পায়তারা করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি করোনার টিকাকে ‘জনপণ্য’ বিবেচনা করে বিনা পয়সায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক নাগরিকের টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি টিকা আমদানিতে বিকল্প উৎসের অনুসন্ধান এবং টিকা প্রদানে রাজনৈতিক, দলীয় প্রেসার, গ্রুপগত যেকোন ধরনের পক্ষপাতিত্ব পরিহার করার আহ্বান জানান।
আজ ১৪ জানুয়ারী সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন এ আহবান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি পার্টির পক্ষ থেকে ৮ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবনাসমূহ নিম্নরূপ:-
১। করোনার টিকাকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘জনপণ্য’ হিসাবে বিবেচনা করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রত্যেক নাগরিকের টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্যে দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত অবকাঠামো এবং চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য সহায়কসহ সংশ্লিষ্ট সমগ্র জনশক্তিকে উপযুক্ত নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণসহ দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে কাজে লাগাতে হবে।
২। করোনা টিকা আমদানি, ব্যবস্থাপনা, প্রয়োগসহ গোটা পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সম্পন্ন করতে হবে। করোনার টিকা নিয়ে মুনাফাকেন্দ্রীক যেকোন প্রকার ব্যবসা ও মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিষিধ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
৩। করোনা টিকা আমদানিতে জরুরী ভিত্তিতে বিকল্প উৎসসমূহ বের করতে হবে, প্রয়োজনে সম্ভব স্বল্পতম সময়ে বাংলাদেশে তার ট্রায়ালের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। দেশীয় সংস্থা করোনার টিকা উৎপাদন করে যৌক্তিক মূল্যে তা সরকারের কাছে বিক্রি করবে। জনচাহিদা বিবেচনা করে সরকার তা ক্রয় করবে। দেশীয় সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করাও দরকার।
৫। টিকা প্রদানের অগ্রাধিকারে যেকোন রাজনৈতিক, দলীয় প্রেসার ও গ্রুপগত বিবেচনা পরিহার করতে হবে।
৬। টিকা ও করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যেকোন ধরনের দুর্নীতি, চুরি, দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনাকে দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। টিকার পাশর্^ প্রতিক্রিয়াও বিশেষ বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন।
৭। টিকাকে করোনা ভাইরাসের একমাত্র সমাধান হিসেবে বিবেচনা না করে মাস্ক, স্যানিটাইজার, পরিচ্ছন্নতা, জনসচেতনতা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কার্যকরি করে তুলতে হবে।
৮। সর্বোপরি করোনার টিকা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যেকোন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণে রাজনৈতিক বিবেচনা পরিহার করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনেতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, ইমরান হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।