মঙ্গলবার ● ৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থবাণিজ্য » বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ : অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত
বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ : অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত
ঢাকা :: বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি জনিয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত ৬৬ দিনের লকডাউনে ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ হতদরিদ্র হয়েছে।
সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ২০২০-২১ অর্থবছরের বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরে ড. আবুল বারকাত বলেন, করোনাভাইরাসের আগে আমাদের কর্মে নিয়োজিত ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছে।
দেশের এ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন নিয়ে অতীতে যেসব কথাবর্তা হয়েছে, সেসব ভুলে যান। বাংলাদেশে ২৬ মার্চের আগের অবস্থা নেই। লকডাউনের ৬৬ দিনে ঘটনা ঘটেছে মারাত্মক। সামনে এটা আরও বাড়তে থাকবে।
আবুল বারকাত আরো বলেছেন, বাংলাদেশ এখন উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ এবং বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক শ্রেণিকাঠামো পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেন, লকডাউনের আগে যে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ অতি ধনী শ্রেণির কাতারে ছিল তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।
তবে উচ্চ-মধ্যবিত্তে থাকা ৩ কোটি ৪০ লাখ থেকে ১ কোটি ১৯ লাখ মধ্য-মধ্যবিত্তের কাতারে নেমে গেছে। আর মধ্য-মধ্যবিত্তের কাতারে থাকা ৩ কোটি ৪০ লাখ থেকে ১ কোটি ২ লাখ নিম্ন-মধ্যবিত্তের কাতারে নেমে গেছে।
তিনি বলেন, “নিম্ন-মধ্যবিত্তে থাকা ৫ কোটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ১৯ লাখ দরিদ্র হয়েছে। দরিদ্র থাকা ৩ কোটি ৪০ লাখ থেকে ২ কোটি ৫৫ লাখ হতদরিদ্র হয়েছে। সব মিলিয়ে লকডাউনের মাত্র ৬৬ দিনে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের শ্রেণি কাঠামো পরিবর্তন হয়েছে। এ মানুষগুলো এক ধাপ নিচে নেমে গেছেন।
আবুল বারাকাত বলেন, গিনি সহগ (অর্থনীতিশাস্ত্রে আয়ের বৈষম্য পরিমাপের একক) যদি দশমিক ৫-এর বেশি হয় সেটা মারাত্মক। একটা সহগ আছে পালমা। পালমা সহগ দেখা হয়, সর্বোচ্চ আয় যে ১০ শতাংশ আছে এবং সর্বনিম্ন আয় যে ৪০ শতাংশের আছে, এই দুইয়ের মধ্যে যে পার্থক্য। এই পার্থক্য যদি ৩ গুণ হয় তাহলে বিপজ্জনক।
‘লকডাউনের আগে আমাদের গিনি সহগ ছিল দশমিক ৪৮, এটি মে মাসের শেষে দশমিক ৬৩৫ হয়েছে। বিপদ মাপার রেশিও পালমা আমাদের ছিল ২ দশমিক ৯২, এখন ৭ দশমিক ৫৩। অতএব এটা মহাবিপজ্জনক।’
তিনি বলেন, আয়বৈষম্য ও সম্পদ বৈষম্য নিরসনের যত পথ পদ্ধতি আছে তার সবগুলো ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, আয়বৈষম্য ও সম্পদ বৈষম্য নিরসনের যত পথ পদ্ধতি আছে তার সবগুলো ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।