মঙ্গলবার ● ৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া ‘মরার ওপর খড়ার ঘাঁ’
গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া ‘মরার ওপর খড়ার ঘাঁ’
অলক চৌধুরী নয়ন :: গণ পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে নৈরাজ্য অসন্তোষের মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির শেষে চলছে কর্মময় জীবন। দীর্ঘ দু’মাসের ও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের কারণে থাকা সাধারণ ছুটির কারণে সরকারী, আধাসরকারী, বেসরকারী সহ ছোট খাটো সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ ছিল। শুধুমাত্র জরুরী প্রয়োজনীয় কিছু অফিস এবং ব্যবসা প্রতিষ্টান খোলা ছিল, যার মধ্যে ব্যাংক, ডাকঘর, ঔষধের দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর দোকান উল্লেখযোগ্য। আবার সব কিছু চালু হওয়ায় মানুষের মাঝে ভয়, আতংকের পাশাপাশি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বৈকি। কিন্তু এই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিমিষেই বিলীন হয়ে অস্বস্তিতে পরিণত হয়েছে যখন থেকে গণ পরিবহনের ভাড়া ৬০ ভাগ বৃদ্ধি করার হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তার কথা ভেবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। স্বাভাবিক ভাবেই গণপরিবহনের মালিকরা আর্থিক ক্ষতি করে গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সরকার চাইলে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে তেলের মূল্য কমিয়ে, বা আর কিছু ঘাটতি দিয়ে গণ পরিবহনের ভাড়া না বাড়িয়ে অর্ধেক যাত্রী দিয়ে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিতে পারতেন। প্রয়োজনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জ্বালানি তেলের মূল্য আবার বর্তমান অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারতেন। তাহলে ভাড়া নিয়ে যে নৈরাজ্য বা অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে তা হতো না। তাছাড়া বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের ধারণা ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়ালেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে যাত্রীর সংখ্যা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, হয়তো শেষ পর্যন্ত তা আর মানা হবে না, বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও পরিবহন মালিকরা এই ভাড়া আর কমাবেন না। মাঝখানে থেকে সাধারণ মানুষের মাথার ওপর মরার উপর খরার ঘা’র মতো ভাড়াটাই বাড়লো। এই গণ পরিবহনের বেশির ভাগ যাত্রী কারা, যারা এই করোনাভাইরাসেন কারণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত । বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যাদের কাছে সরকারি কোন সাহায্য পৌঁছায়নি আবার এরা সাহায্যের জন্য কারো কাছে হাত পাততে পারেনি, পারেনি ত্রাণের জন্য লাইনে ধরতে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সরকার অনেক খাতে প্রণোদনা দিয়েছেন যার জন্য আর্থিক খাতে সরকারও বেশ চাপে আছেন। সরকারের যেসব ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়েছেন সেসব প্রণোদনা কেউ পেয়েছেন আবার কেউ পায়নি। আবার এই প্রণোদনা নয় ছয়ও হয়েছে যার বড় প্রমাণ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি বহিষ্কার । এখন সরকার যদি গণপরিবহনের ভাড়া না বাড়িয়ে জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিতো তাহলে এই প্রণোদনার সুফল সব মানুষ পেতো। যেখানে এই গণপরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগ নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত যাদের জীবন যাপন করতে সাধারণ সময়ও হিমশিম খেতে হয় সেখানে করোনাভাইরাসের কারণে দূর্ভোগ বাড়িয়েছে বহুগুন। দীর্ঘদিন লকডাউনে থাকায় কর্মহীন মানুষ এমনিতেই আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, তার ওপর ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া ‘মরার ওপর খড়ার ঘাঁ’র শামিল। এমনিতেই সাধারণ মানুষ পরিবহন সেক্টরের কাছে জিম্মি। তাই জনকল্যাণমুখী দাবিদার সরকার জনগণের কষ্টের কথা চিন্তা করে লকডাউন তুলে দিয়েছেন। এবার ভাড়ার দিকটাও একটু ভেবে দেখবেন কি ?