শুক্রবার ● ১৪ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » ছবিঘর » রাঙামাটি জেলায় কোন সংসদ সদস্য আছে বলে মনে হয় না : নির্মল বড়ুয়া মিলন
রাঙামাটি জেলায় কোন সংসদ সদস্য আছে বলে মনে হয় না : নির্মল বড়ুয়া মিলন
স্টাফ রিপোর্টার :: আজ ১৪ জুন-২০২৪ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাঙামাটি পার্বত্য জেলার অস্থায়ী কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাঙামাটি পার্বত্য জেলা কমিটির সভাপতি মো. আবুল হাসেম।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য নির্মল বড়ুয়া মিলন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভার প্রধান অতিথি নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, ২০২৪-২০২৫ প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কোন সু-সংবাদ নাই। বাজেট বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কোন সু-সংবাদ দিতে পারেনি আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার। জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয় কমাতে বাজেটে বিশ্বাসযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেই; বরং মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় ও ক্রয়ক্ষমতা আশংকাজনকভাবে কমে গেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটি জেলার বৃহত্তর উপজেলা বাঘাইছড়ি উপজেলা ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ গত ২৯ মে-২০২৪, পরে ৯ জুন ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, কিন্তু সরকার দলীয় প্রার্থীকে জিতানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে দুই বার তারিখ পরিবর্তন করেও স্থানীয় প্রশাসন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দিতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন ৯ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
এতে পরিস্কার বুঝা যায় সরকার ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় আর না হয় রাঙামাটি জেলার আইন-শৃঙ্খলা সরকারে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নাই।
নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় গত ১৫ বছরে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দু্ই পাশে বহুতল মার্কেট, দোকান-পাটসহ স্থাপনা নির্মান করে রাঙামাটির প্রধান সড়কটি সরু করে ফেলেছে ভূমিদস্যরা, কাপ্তাই লেক ভরাট, বাধ নির্মাণ, বেআইনী দখল রোধ সকল অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দুই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। রাঙামাটি শহরে পৌরসভার ভিতর ফুটপাত দখল করে শত-শত অবৈধ দোকান গড়ে তোলা হয়েছে অথচ রাঙামাটি পৌরসভার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন নিরব।
তিনি বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় প্রতিটি উপজেলায় ভূমিদস্যরা সরকারি দল এবং কয়েকটি আঞ্চলিক দলের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে সেই সব জায়গা-জমি সাধারন মানুষে কাছে বিক্রয় করে কোটি-কোটি টাকা নিজেদের পকেট ভারী করছে এতে প্রতিনিয়ত পাহাড়ে ভূমি সমস্যা তৈরী হচ্ছে। ১৯৮৫ সাল থেকে রাঙামাটিতে ভূমি বন্দবস্তী দেয়া বন্ধ রাখার কারণে ভূমিহীনদের সংখ্যা নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নির্মল বড়ুয়া মিলন আরো বলেন,রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় হচ্ছে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন নগরী কিন্তু রাঙামাটি শহরে সিএনজি অটোরিক্সা ছাড়া যাত্রী পরিবহনের অন্য কোন বাহন নাই, রাঙামাটিতে সিএনজি অটোরিক্সা চলছে সিএনজি গ্যাস দিয়ে অথচ যাত্রীদের নিকট থেকে সিএনজি অটোরিক্সার ড্রাইভারেরা যাত্রীদের নিকট থেকে ভাড়া আদায় করেছে তৈল এর গাড়ির। শহরে যেখানে ২শত থেকে ৩শত সিএনজি অটোরিক্সা চলার কথা সেখানে রাঙামাটি শহরে চলছে দুই হাজারের অধিক সিএনজি অটোরিক্সা। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনে সর্বক্ষেত্রে দলীয় করণ করায় রাঙামাটি শহরে পৌরসভার ভিতর ফুটপাত দখলদার মুক্ত করা, রাঙামাটি শহরে অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ করা, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দু্ই পাশে বহুতল মার্কেট, দোকান-পাটসহ স্থাপনা নির্মান করে রাঙামাটির প্রধান সড়কটি যারা সরু করে ফেলেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া, কাপ্তাই লেক ভরাট, বাধ নির্মাণ, বেআইনী দখল রোধ সকল অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন এবং রাষ্ট্রিয় প্রশাসন পদক্ষপে নিতে পারছেন না তার মূল কারণ সকল প্রশাসনে অতিমাত্রায় দলীয় করণ।
তিনি আরো বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কাপ্তাই লেক ভরাট, রাঙামাটি শহরে পৌরসভার ভিতর ফুটপাত দখলদার মুক্ত করা, সিএনজি অটোরিক্সা চালক-মালিকদের সিন্ডিকেট এর কারণে যাত্রীদের বছরের পর বছর ধরে ভোগান্তি, কৃষি জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ, ভূমিহীনদের ভূমির সমস্য সমধান এবং রাষ্ট্রিয় ভূমি দখলকারী ভূমিদস্যদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত একটি কথাও বলেনি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, জনসাধারনের ভোগান্তি দেখতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় কোন সংসদ সদস্য আছে বলে মনে হয় না।
তিনি রাঙামাটি জেলার সকল প্রশাসনকে দলীয় করণ বন্ধ করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে জনস্বার্থে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রতিপালন এবং রাঙামাটি শহরে যাত্রী সেবার জন্য কম সময়ের ভিতর টেম্পু/ব্যাটারী চালিত টম টম/টাউন সার্ভিস বাস চালু করা আহবান জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেছেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জনগণের ভালবাসা নিয়ে আগামী দিনগুলোতেও আপোষহীন ধারায় তার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক জুঁই চাকমা, বাংলাদেশ ভূমিহীন সংহতির সহসভাপতি রাখি ত্রিপুরা, সদস্য নার্গিস আক্তার ও মাতৃদেবী চাকমা ।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ ভূমিহীন সংহতির শিখা রানী দে, হালিমা আক্তার, মঙ্গলা দেবী চাকমা,শংঙ্খ চাকমা, রেনুকা চাকমা, মাতৃদেবী চাকমা, সাধনা দেবী চাকমা, দিগন্তবিকাশ তালুকদার, বুলু বেগম, কহেলী চাকমা, বিমলা দেবী চাকমা, কৃষণা চাকমা ও মেকি চাকমা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত পার্টির ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক জুঁই চাকমা।