শিরোনাম:
●   সরকারকে সংস্কার, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে ●   বাতিল হওয়া স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের কোন সুযোগ নেই ●   দীপংকর তালুকদার এর বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ ●   রাঙামাটিতে মহান বিজয় দিবসে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধাঞ্জলী ●   ৭১ এর চেতনায় ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ধারণ করতে হবে ●   নবউত্থিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্ভাবনা নষ্ট করতেই ঠান্ডা মাথায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয় ●   শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ লক্ষ লক্ষ শহীদদের জীবনদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের উন্মেষ ঘটেছে ●   বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির কাউন্সিলে সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন, সম্পাদক জুঁই চাকমা ●   ফটিকছড়িতে সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজের নতুন অফিস উদ্বোধন ●   সংস্কার ছাড়া গতানুগতিক নির্বাচন বিশেষ কোন কাজে আসবেনা : ডঃ তোফায়েল আহমেদ
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

Kaler Dabi – কালের দাবী – Online News Portal in Bangladesh
মঙ্গলবার ● ২৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » ছবিঘর » আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ৩৫ বছর পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিতদের দ্বারা
প্রথম পাতা » ছবিঘর » আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ৩৫ বছর পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিতদের দ্বারা
২০৫ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ২৩ এপ্রিল ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ৩৫ বছর পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিতদের দ্বারা

--- নির্মল বড়ুয়া মিলন :: পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি এলাকা, যা তিনটি জেলা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত। চট্টগ্রাম বিভাগের এই এলাকা পাহাড় ও উপত্যকায় পূর্ণ বলে এর নামকরণ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম।
জানায়ায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি ১৫৫০ সালের দিকে প্রণীত বাংলার প্রথম মানচিত্রে বিদ্যমান ছিল। তবে এর প্রায় ৬০০ বছর আগে ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা এই অঞ্চল অধিকার করেন। ১২৪০ সালের দিকে ত্রিপুরার রাজা এই এলাকা দখল করেন। ১৫৭৫ সালে আরাকানের রাজা এই এলাকা পুনর্দখল করেন, এবং ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত অধিকারে রাখেন। মুঘল সাম্রাজ্য ১৬৬৬ হতে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত এলাকাটি সুবা বাংলার অধীনে শাসন করে। ১৭৬০ সালে ব্রিটিস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে আনে। ১৮৬০ সালে এটি ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়। ব্রিটিশরা এই এলাকার নাম দেয় চিটাগাং হিল ট্র্যাক্ট্স বা পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ হিসাবে বাংলা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। ১৯৪৭ সালে এই এলাকা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়। ১৯৫৮ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাই হ্রদে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয় । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটি বাংলাদেশের জেলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৮০ এর দশকের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তিনটি জেলা - রাঙামাটি, বান্দরবান, ও খাগড়াছড়িতে বিভক্ত করা হয়।
১৯৫৮ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর বাঁধ নির্মানের কারণে পাহাড়ে পাহাড়ি - বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর মানুষের সার্বিক জীবনে পরিবেশগত বিপর্যয় নেমে আসে। সমান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় রাঙামাটি জেলার পাহাড়ি – বাঙ্গালী উভয় জনগোষ্ঠীর লোকজন।
১৯৯৬ সালের ৫ আগস্ট নির্বাচিত তিনটি স্থানীয় সরকার পরিষদ ভেঙে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এর পর প্রত্যেক পরিষদে একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য মনোনয়ন দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন ‘পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’ গঠন করে সরকার। পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ১৯৯৮ সালে আইন সংশোধন করে ‘পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’ থেকে ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামকরণ হয়। সেই সঙ্গে এই তিন জেলা পরিষদে নিজ দলীয় লোক মনোনয়ন দিয়ে আসছে সরকার।
পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের (বর্তমান পার্বত্য জেলা পরিষদ) নির্বাচন প্রথম ও শেষবার অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন।
১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংলগ্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী সভার সদস্যদের উপস্থিতিতে সরকারের পক্ষে জাতীয় কমিটির আহবায়ক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে গঠন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন ১৯৮৯, বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯) ইত্যাদি এবং এর বিভিন্ন ধারাসমূহ সংশোধন করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ :
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন-১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ১২ নং আইন) অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হয়। বিগত ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুসারে ২৭ মে ১৯৯৯ ইংরেজি তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কর্মপরিধি :
(ক) পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে পরিচালিত সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ উহাদের আওতাধীন এবং উহাদের উপর অর্পিত বিষয়াদি সার্বিক তত্বাবধান ও সমন্বয়: (খ) পৌরসভাসহ স্থানীয় পরিষদসমুহ তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন; (গ) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর কার্যাবলীর সার্বিক তত্ত্বাবধান; (ঘ) পার্বত্য জেলার সাধারন প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন; (ঙ) উপজাতীয় রীতিনীতি, প্রথা ইত্যাদি এবং সামাজিক বিচার সমন্বয় ও তত্ত্বাবধান; (চ) জাতীয় শিল্পনীতির সহিত সংগতি রাখিয়া পার্বত্য জেলাসমুহে ভারী শিল্প স্থাপনের লাইসেন্স প্রদান; (ছ) দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান কার্যক্রম পরিচালনা এবং এনজিও কার্যাবলীর সমন্বয় সাধন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠনের উদ্দেশ্য : প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কামকান্ড সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে পাবত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আথ- সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ।

রাঙামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ :
১৯৮৯ সনে পার্বত্য জেলা সমুহে বিভিন্ন অনগ্রসর উপজাতি অধ্যুষিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন কল্পে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ১৯ নং , ২০ নং ও ২১ নং আইন দ্বারা অনুযায়ী রাঙামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়। এ উদ্দেশ্যে রাঙামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ বিল, ১৯৮৯, ২৬শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৯ তারিখ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। আইনটি ৬ই মার্চ, ১৯৮৯ তারিখের বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। একই বছর ২৫শে জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান সহ ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদ গঠিত হয়। এদের মেয়াদ শেষ করে তার থেকে অদ্যবধি চলছে মনোনীতদের দিয়ে।

১৯৯৭ সনের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন ও এ জেলার উপজাতীয় অধিবাসীগণসহ সকল নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অধিকার সমুন্নত রাখা এবং সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনে ১৯৯৮ সনের ৯ নং আইন দ্বারা পরিষদের আইন সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী “রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ”,“বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ” ও “খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ” এ নামে রুপান্তরিত হয়েছে।

রাঙামাটি/বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত বিভাগ সমুহ হচ্ছে :
স্বাস্থ্য বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, প্রাণীসম্পদ বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতি ইন্সটিটিউট, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, বাজারফান্ড প্রশাসন, টেক্সটাইল ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, এফডব্লিউভিটিআ্ই, জেলা সমাজসেবা বিভাগ,হর্টিকালচার সেন্টার, জেলা সমবায় বিভাগ, পর্যটন কর্পোরেশন, জেলা উন্নয়ন কমিটি, জুম চাষ, মৎস্য হেচারী, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট ও অন্যান্য শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় শিল্প বাণিজ্যের লাইসেন্স, জম্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ ও মহাজনী কারবার ইত্যাদি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনে চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নির্বাচন করে দায়িত্ব পালনের কথা কিন্তু দীঘ ৩৫ বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে অনির্বাচিত সদস্যদের দ্ধারা। ফলে জেলা পরিষদ গুলো হয়ে উঠেছে দুর্নীতির আখড়া। বান্দরবান জেলা পরিষদে কয়েক যুগ ধরে একই ব্যাক্তি বহালতবিয়তে। অনির্বাচিত সদস্যদের দিয়ে পরিচালনার কারনে পরিষদ সমুহের সাধারন জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে অবিশ্বাস এবং আইনী বিতর্ক বিষয় সমুহ এক নজর :
(১) পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান ও মূল সমস্যা হচ্ছে ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ ও এই সমস্যা সমাধানের জন্য ২০০১ সালে গঠিত হয়েছিল ভূমি কমিশন। তারা একটি বিরোধেরও নিষ্পত্তি করতে পারেনি। (২) পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন ৩৫ বছরেও হয়নি।
শান্তিচুক্তির পর বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি নিয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন হলেও সেখানে অদ্যবধি কোনো নির্বাচন হয়নি এমনকি ভোটার তালিকাও প্রনয়ন করা হয়নি। (৩)
১৯৯৭ সালে পিসিজেএস (শান্তিবাহিনী) এবং সরকারের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে বড় ধরনের সাংবিধানিক ও আইনী বিতর্ক মহামান্য উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে।
(৪) পাহাড়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে ছিল যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ছয়টি ক্যান্টনমেন্ট থাকবে। এর বাইরে অস্থায়ী যত ক্যাম্প আছে সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু পাহাড়িদের অভিযোগ-চুক্তি অনুযায়ী সে সব করা হয়নি। (৫) পাহাড়িদের বিভেদ ও আন্তঃকোন্দল। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হওয়ার পর থেকে পাহাড়িদের সংগঠনগুলো মূলত ছয় সন্ত্রাসী সশস্ত্র সংগঠন। এরা হলো পিসিজেএসএস-মূল, পিসিজেএসএস (সংস্কারপন্থী), ইউপিডিএফ-মূল, ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক, এমএনপি (মগ গণতান্ত্রিক পার্টি) এবং সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ ইত্যাদি আঞ্চলিক দলে বিভক্ত। (৬)
বাঙালিদের বসতি এবং অবিশ্বাস। সত্তরের দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভূমিহীন লোকজনকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে আসা শুরু হয়। বাঙালিদের সংগঠন সমহ দাবি পাহাড়িদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করার। আর পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন এবং অন্যান্য সংগঠনগুলোর দাবি এসব বহিরাগত বাঙালিদের তাদের পূর্বের জায়গায় ফেরত পাঠানো হোক ইত্যাদি। (৭) আঞ্চলিক পরিষদসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় পিছিয়ে পড়া পাহাড়িদের উন্নয়ন এবং দুর্গম এলাকা সমূহে যথাযথ তদারকির মাধ্যমে উন্নয়ন হয়নি।
এছাড়া স্থানীয়দের দাবি দুর্গম এলাকার পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই উন্নয়ন সেভাবে হয়নি। দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে উন্নয়নের জন্যে পাহাড়ে যে বিশেষ উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা ছিল সে রকমও হয়নি।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর মি.সন্ত লারমার সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত শান্তিচুক্তির অন্যতম শর্ত অনুযায়ী সরকার তিন পার্বত্য জেলা থেকে ২৪০টি সেনা ক্যাম্প ও একটি সম্পূর্ণ ব্রিগেড প্রত্যাহার করে নেয়। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শান্তিচুক্তির অধিকাংশ শর্ত বাস্তবায়ন করেছে বলে সরকারের দাবি। সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রতি সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটলেও শান্তির আলোর দেখা মেলেনি পার্বত্য চট্টগ্রামে। চুক্তি ভংগ করে পাহাড়ি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর অস্ত্রের রাজনীতি পার্বত্য তিন জেলার শান্তি কেড়ে নিয়েছে। পরিকল্পিত ভাবে নিরহ মানুষের ঘরে অগ্নিসংযোগ, খুন, গুম, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ব্যাংক লুট করা পার্বত্য অঞ্চলের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক সংগঠন পিসিজেএসএস-মূল, পিসিজেএসএস (সংস্কারপন্থী), ইউপিডিএফ-মূল, ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক, এমএনপি (মগ গণতান্ত্রিক পার্টি) এবং সর্বশেষ যুক্ত কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আছে।

নিরহ মানুষের ঘরে অগ্নিসংযোগ, খুন, গুম, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ব্যাংক লুন্ঠনকারী সন্ত্রাসীদের দমনে অনির্বাচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কোন ভুমিকা রাখতে পারছেন না এমন কি পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ বান্দরবানের সশস্ত্র তৎপরতার পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ পর্যন্ত করেননি এবং বান্দরবানে কুকি -চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র তৎপরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বাংলাদেশীদের জানমালের নিরাপত্তা নিয়েও আশংকা তৈরী করেছে।
অনির্বাচিত বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাথে বান্দরবনে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সাথে একদিকে যখন শান্তি আলোচনা চলছে অন্যদিকে তখন কুকি- চিন- কেএনএফ সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই করেছে, দিনে দুপুরে ব্যাংক থেকে টাকা লুট করেছে, মানুষকে অপহরণ করছে। এটা স্পষ্ট যে, বান্দরবান অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দূর্বলতা রয়েছে, সরকারের কার্যকরি গোয়েন্দা নজরদারির ক্ষেত্রে রয়েছে বড় ঘাটতি।
অনির্বাচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অথবা পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বলে নজির নেই।
অথচ পার্বত্য জেলার সাধারন প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন করার কথা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পর্ষদ সমুহের দায়িত্ব রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পর্ষদ অনির্বাচিত হওয়াতে তারা জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে রয়েছে।
স্থানীয় নাগরিকরা বলছেন, পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়ার অর্থ ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বরের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে গঠিত জেলা পরিষদ আইনকে অমান্য করা। আর এই আইন অমান্য করায় সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ মানুষ। জেলা পরিষদের কাছ থেকে যে ধরনের সেবা তাদের পাওয়ার কথা, তা তারা পাচ্ছে না অনির্বাচিত রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে । তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়ায় সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হলেও জবাবদিহি নিশ্চিতে কাজ করতে পারছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের পর্ষদ সদস্যরা।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদসহ রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা তিন জেলা পরিষদের নির্বাচনের দাবি স্থানীয়দের।





ছবিঘর এর আরও খবর

সরকারকে সংস্কার, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে সরকারকে সংস্কার, নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে
বাতিল হওয়া  স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের কোন সুযোগ নেই বাতিল হওয়া স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের কোন সুযোগ নেই
দীপংকর তালুকদার এর বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ দীপংকর তালুকদার এর বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ
রাঙামাটিতে মহান বিজয় দিবসে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধাঞ্জলী রাঙামাটিতে মহান বিজয় দিবসে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধাঞ্জলী
৭১ এর চেতনায় ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ধারণ করতে হবে ৭১ এর চেতনায় ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ধারণ করতে হবে
নবউত্থিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্ভাবনা নষ্ট করতেই ঠান্ডা মাথায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয় নবউত্থিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্ভাবনা নষ্ট করতেই ঠান্ডা মাথায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়
শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ লক্ষ লক্ষ শহীদদের জীবনদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের উন্মেষ ঘটেছে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ লক্ষ লক্ষ শহীদদের জীবনদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের উন্মেষ ঘটেছে
সংস্কার ছাড়া গতানুগতিক নির্বাচন বিশেষ কোন কাজে আসবেনা : ডঃ তোফায়েল আহমেদ সংস্কার ছাড়া গতানুগতিক নির্বাচন বিশেষ কোন কাজে আসবেনা : ডঃ তোফায়েল আহমেদ
যে কোন উসকানি মোকাবেলা করে জনগণের ঐক্য বজায় রাখতে হবে : সাইফুল হক যে কোন উসকানি মোকাবেলা করে জনগণের ঐক্য বজায় রাখতে হবে : সাইফুল হক
ভারতের বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার প্রথম করনীয়  হচ্ছে নিজেদের মধ্যে লৌহদৃঢ ঐক্য গড়ে তোলা ভারতের বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার প্রথম করনীয় হচ্ছে নিজেদের মধ্যে লৌহদৃঢ ঐক্য গড়ে তোলা

আর্কাইভ