মঙ্গলবার ● ৮ আগস্ট ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবিঘর » গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা
গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা
আজ মঙ্গলবার ৮ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন, গণ আন্দোলন - গণঅভ্যূত্থানের পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এই সরকার লুটেরাদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক। এখন আমেরিকার দুর্নীতিবিরোধী প্রধান বাংলাদেশ সফর করছেন। এই সরকারের টাকা পাচারের ঘটনা ইউরোপ-আমেরিকাসহ এখন বিশ্বের সবাই জানে। এতদিন যে লুটপাটের বন্যা চলেছে, এখন তা বেরিয়ে আসছে। আমেরিকা এখন বলছে দুর্নীতি পাচার বন্ধ কর, বিরোধীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ কর।
মান্না বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিকে আমরা জাতীয় দাবিতে পরিণত করতে পেরেছি। বিশ্বের দুই-তিনটি দেশ বাদে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এই সরকারকে কর্তৃত্ববাদী সরকার মনে করে। এই সরকার তো বয়ান তৈরি করেছে, গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নয়ন ভালো। তো সেই উন্নয়ন এখন আমরা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতায় দেখতে পারছি। খালেদা জিয়া, তারেক-জোবাইদার মামলার রায় হতে সময় লাগে না। কিন্তু সাংবাদিক সাগর-রুনির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১০২ বার পিছিয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। অন্য কোন পথ নেই। সমঝোতার কোন সুযোগ নেই। কেউ যদি এই স্বৈরাচার সরকারের ফাঁদে পা দেয়, তাহলে জনগণের সাথে বেঈমানি করা হবে। এখন বাঁচা মরার লড়াই৷ মুক্তির লড়াই৷ জনগণকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে রক্ষা করার লড়াই।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, লুটপাট করে ক্ষমতাসীন সরকার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। এতদিন দেশের জনগণ এই লুটপাটকারীদের চিনত। এখন সারা পৃথিবীর মানুষ জানে। এই সরকার দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয়। আমরা শুধু সরকার পতনের আন্দোলন করছি না, পাশাপাশি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য লড়াই করছি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরেও দেশের মানুষের সত্যিকারের মুক্তির কোন বন্দোবস্ত হয়নি। আমরা সেই বন্দোবস্তের জন্য লড়াই করছি। জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। এজন্য আমরা বলছি সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা। গণতন্ত্র মঞ্চের লড়াই দেশের জনগণের সত্যিকারের মুক্তির লড়াই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই, শাসনব্যবস্থার সংস্কারের লড়াই৷
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, দেশের রাজনীতিতে স্বতন্ত্র ও বিকল্প শক্তি হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চ দাঁড়াতে চায়। বর্তমানে যে দুঃশাসন চলছে, তা ১৯৭২ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত ছিল। তখন হাজার হাজার বামপন্থীদের হত্যা করা হয়েছিল। পরে শান্তির লক্ষ্যে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল। আজ যারা কর্তৃত্ববাদী সরকারের দুঃশাসনের সমর্থন করছেন, জনগণের হাত থেকে তারা রেহাই পাবেন না। দেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এতে কে মদদ দিচ্ছে? বর্তমান সরকার। শেষবারের মতো অনুরোধ করছি, তারা জনগণের পক্ষে ফিরে আসুক। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হবেই, লড়াই-সংগ্রামে আমরা এক থাকবোই।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এড. হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকার এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের যে লড়াই গণতন্ত্র মঞ্চ শুরু করেছে তা অব্যাহত থাকবে যতদিন না জনগণের জন্য একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায়। সংবিধান এবং শাসন কাঠামোর সংস্কারের মাধ্যমে আমরা সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রশ্নে গণতন্ত্র মঞ্চ সকল বিরোধী দলকে একটি ঐক্যমতে আনতে পেরেছে। এটা এই মঞ্চের অনেক বড় সাফল্য।