শনিবার ● ৮ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবিঘর » আর একটি ভোট ডাকাতির জন্যই আরপিওর এই সংশোধনী : গণতন্ত্র মঞ্চ
আর একটি ভোট ডাকাতির জন্যই আরপিওর এই সংশোধনী : গণতন্ত্র মঞ্চ
আজ ৮ জুলাই ২০২৩ বেলা ১১টায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আহুত সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, আর একটি পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠানের নীলনক্সা অনুযায়ী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ - আরপিও’র নতুন সংশোধনী আনা হয়েছে। আরপিও এর নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে iভোট বাতিলে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ক্ষমতা হরণ করে নির্বাচন কমিশনকে অকার্যকরী ঠুটোঁ জগন্নাথে পরিনত করা হয়েছে। এই সংশোধন সরকার ও সরকারি দলের নির্বাচনী জ্বালিয়াতির রাস্তা আরও প্রশস্ত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে গনতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডির সভাপতি
আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া বিষয়ক সমন্বয়ক হাসিব উদ্দিন হোসেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাইফুল হক বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর সংশোধনীর মাধ্যমে যে কোন অনিয়মের কারণে ভোট বন্ধ রাখতে নির্বাচন কমিশনের যে ক্ষমতা ছিল বাস্তবে তা কেড়ে নেয়া হল।আরপিওর ৯১(ক) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে যে তারা আইনানুগভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না তাহলে তারা নির্বাচনের যে কোন পর্যায়ে ভোট বন্ধ রাখতে পারে।অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিস্থিতি অনুকূল না হলে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের আগেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারত। এখন এই ক্ষমতা সীমিত করে কেবল ভোটের দিন সংসদীয় আসনের কতিপয় কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রাখতে পারবে, পুরো সংসদীয় আসনের নয়।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের আসল ক্ষমতা ছিল আরপিওর ৯১(ক) ধারা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর সংশোধনী বিল পাশ করে এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিতে এবং জাতীয় নির্বাচনে সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের সমন্বয়ক বলেন, দেশের গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাই যেখানে ভেংগে দেয়া হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন সরকার যখন আর আর একটি সাজানো একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে তখন ভোট বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমানো যে পুরোপুরি দুরভিসন্ধিমূলক তাও স্পষ্ট । আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ও সরকারি দলের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতেই যে এই সংশোধনী আনা হয়েছে তাও অত্যন্ত পরিস্কার।
আর নির্বাচন কমিশন যেভাবে অযাচিতভাবে নিজেদের ক্ষমতা কমানোর সংশোধনী হাজির করে সরকারী দলের ভোট কারচুপির রাস্তা প্রশস্ত করে দিয়েছে তা বিস্ময়কর ও আপত্তিকর।তিনি বলেন সরকারি দলের আর একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পায়তারার কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা দিক থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। আরপিও’র এই সংশোধনী এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে দায়িত্ব দিয়েছে আইপিওর এই সংশোধনী তারও পরিপন্থী। এর মধ্যে দিয়ে নির্বাচন কমিশননের হাত পা বেঁধে ফেলা হোল।
সাইফুল হক বলেন, আরপিওর ধারা অনুযায়ী আগে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগে যাবতীয় বকেয়া বিল পরিশোধের বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন ক্ষুদ্রঋণ, টেলিফোন,গ্যাস,বিদ্যুৎ, পানির বকেয়া বিল একদিন আগে জমা দিলেও চলবে।এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনে ঋণখেলাপি ও বিলখেলাপিদের দৌরাত্ম আরও বেড়ে যাবে।এসব কারণে এই সংশোধনী কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে আ স ম আবদুর রব বলেন, এই ভোট ডাকাত সরকারকে দেশের মানুষ আর বিশ্বাস করেনা। এদেরকে বিদায় করা ছাড়া আমরা ভোটের অধিকারও আদায় করতে পারবনা।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আর একটি ভোট ডাকাতির জন্যই আরপিওর এই সংশোধনী আনা হয়েছে। কোন কৌশলেই এবার সরকারের রক্ষা হবে না।
জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সংশোধনীর বলে সরকারের নির্বাচনী তামাশা নতুন চেহারা নেবে।সকল কেন্দ্রে কারচুপি করলেও কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে তারা দেখাতে চাইবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এই সরকারকে আর কোনভাবেই আর একটি তামাশার নির্বাচন করতে দেয়া হবেনা।আন্দোলনের পথে অচিরেই এই সরকারকে বিদায় দেয়া হবে।
হাসিব উদ্দিন হোসেন বলেন, সরকারি দলের পক্ষে জাতীয় নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতেই আরপিওর এই সংশোধনী আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের পথেই আমরা সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে জনগণের বিজয় নিশ্চিত করব।