বৃহস্পতিবার ● ১৮ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবিঘর » আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার বিদ্যমান সংকটের সমাধান করবেনা
আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার বিদ্যমান সংকটের সমাধান করবেনা
আজ সকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংহতি মিলনায়তনে গণতন্ত্র মঞ্চ আহুত সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বলেন প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে তার নেতৃত্বে সংসদে থাকা তার রাজনৈতিক মিত্রদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের যে ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশবাসীর কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।এই ধরনের সরকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারেরই সম্প্রসারণ। তারা বলেন ২০১৪ আর ২০১৮ সালের তামাশাপূর্ণ জ্বালিয়াতির নির্বাচন প্রমান করেছে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ন্যুনতম কোন অবকাশ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট তুলে ধরে গণতন্ত্র মঞ্চের আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার,মোফাক্কারুল ইসলাম নবাব ও সাকিব আনোয়ার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী ও আকবর খান, জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মন্টু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ঈমন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, সরকার ও সরকারি দল ক্ষমতায় থেকে আবারও আর একটি তামাশার নির্বাচনের পাঁয়তারা করে চলেছে।এজন্য সরকার একদিকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানিমূলক মামলা, সাজানো মামলায় শাস্তি প্রদান, নির্যাতন,নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে,আর অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে নানা মিথ্যা প্রচারণা আর কুটকৌশল অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানির সংকট ও দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে চরম দূর্যোগ নেমে এসেছে। সর্বক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনা, চুরি,দূর্নীতি,সীমাহীন লুটপাট ও অর্থপাচার দেশ ও জনগণকে এক অসহনীয় অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকার যে দেশ চালাতে পারছেনা তা অত্যন্ত স্পষ্ট। জবরদস্তি করে যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে দেশ ও জনগণকে তারা গভীর সংকটে নিপতিত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গণআন্দোলন যত জোরদার হচ্ছে সরকার তত বেসামাল হয়ে পড়ছে।প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য বিবৃতিতেও তা পরিস্কার বেরিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার যে চরম হতাশা ও অস্থিরতায় ভুগছেন সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলী ও সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ থেকেও তা স্পষ্ট ধরা পড়েছে।বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া দেশ থেকে কোন কিছু না কেনার সিদ্ধান্ত হটকারি ও আত্মঘাতী কিনা সচেতন মহলে ইতিমধ্যে এই প্রশ্ন গুরুতর হয়ে দেখা দিয়েছে। এর পালটা ব্যবস্থা হিসাবে তারাও যদি বাংলাদেশ থেকে কোন কিছু না কেনার সিদ্ধান্ত নেয় তার সম্ভাব্য ফলাফল কি হবে! সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও তার রপ্তানি বাণিজ্য যে বড় ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষিপ্ত হবে এই আশংকা নিশ্চয় অমূলক নয়।
আর খুব আকস্মিকভাবে ঢাকায় অবস্থানরত ছয় দেশের কুটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রটোকল প্রত্যাহারের ঘটনাও কুটনৈতিক সম্পর্ক ও বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে অবিশ্বাস ও অস্থিরতার তৈরী করবে তা অনুমান করা কঠিন নয়।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, সরকারের এইসব আচরণ থেকে এটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে, বিশাল বহর নিয়ে তিন দেশে প্রধানমন্ত্রীর ১৫ দিনের সফরে দেশ ও সরকারের জন্য তেমন কিছু অর্জিত হয়নি; অর্থাৎ ক্ষমতায় থেকে আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে কথিত এইসব উন্নয়ন অংশীদারদেরকে তিনি ‘ম্যানেজ ‘ করতে পারেননি।গত ১৫ মে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন, বিবিসিকে দেয়া তার সাক্ষাৎকার ও সরকারের পদক্ষেপেই তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।এসব তৎপরতায় সরকারের রাগ আর ক্ষোভেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,হতাশা ও ক্ষোভ থেকে নেয়া এসব বক্তব্য ও পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করছে, যার সম্ভাব্য মাশুল দিতে পারব হবে দেশ ও দেশের জনগণকে। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে সরকার দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে বিপদগ্রস্ত করে তুলছে। দেশের জনগণ এই অবস্থা কোনভাবেই মেনে নিতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে ১৪ দফার ভিত্তিতে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে আন্দোলনের নিম্নোক্ত ধারাবাহিক কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
১। আগামী ২৩ মে ২০২৩ মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণে পদযাত্রা। সকাল ১০.৩০ এ জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পদযাত্রা শুরু হবে এবং বাহাদুর শাহ পার্কে যেয়ে শেষ হবে।
২। ২৮ মে ঢাকা উত্তরে পদযাত্রা। সকাল ১০.৩০ এ মালিবাগ রেলগেট থেকে পদযাত্রা শুরু হবে এবং বাড্ডায় যেয়ে শেষ হবে।
৩। ৪ জুন থেকে ৭ জুন ২০২৩ ঢাকা থেকে দিনাজপুর অভিমুখে রোড় মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।