বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » মহামারী থেকে মানুষকে বাঁচাতে গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছেন জননেতা সাইফুল হক
মহামারী থেকে মানুষকে বাঁচাতে গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছেন জননেতা সাইফুল হক
ঢাকা :: আজ বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ের সম্মুখে পার্টি আহুত বিক্ষোভ সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সরকারের ভুল, আত্মঘাতি ও সমন্বয়হীন নীতিকৌশল করোনার উৎপাদন-পুনরুৎপাদন ঘটিয়ে চলেছে; দেশের মানুষকে এক ভয়াবহ বিপদ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। যেভাবে তারা গায়ের জোরে চরম কর্তৃত্ববাদী শাসন ও দমন চালিয়ে ক্ষমতায় আছেন একই স্বেচ্ছাচারী পন্থায় তারা করোনা মোকাবেলার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন যে কৌশলে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে তা ‘একলা চলোর এই আত্মম্ভরী বিশৃঙ্খল নৈরাজ্যিক পথে করোনা মহামারী পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো যাবে না। কর্তৃত্ব, কায়েমী মহলের চাপ আর ভাগ-বখরার দ্বন্দ্বে এখনও পর্যন্ত করোনার হটস্পটসমূহে কার্যকরি লকডাউন বলবত করা গেল না; লকডাউন আর জোন নিয়ে রশি টানাটানিও বন্ধ হল না। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমনের চার মাস পরেও এখনও করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসার বেহাল দশা দূর হোল না। করোনার চিকিৎসাও এখন বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। জনগণের দায়িত্ব নিতে না পারায় অপরিকল্পিতভাবে সবকিছু খুলে দিয়ে সরকার দেশের মানুষকে নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়েছে। জীবিকার কথা বলে মানুষের জীবনকেই গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, করোনা চিকিৎসা সামগ্রীর কেনাকাটা কেন্দ্র করে বেশুমার দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে। তিনি বলেন, করোনা মহামারী চলতে থাকলে সরকারের সমগ্র উন্নয়ন প্রকল্পই মুখ থুবড়ে পড়বে।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি আগামী অর্থবছরের বাজেটের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তেলের মাথায় তেল দিয়ে ধনী পালনের বাজেট দিয়ে করোনা মহামারীজনীত দুর্যোগ থেকে উত্তরণ ঘটানো যাবে না। তিনি বলেন, গতানুগতিক বাজেটের পুরো কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে কেবল বরাদ্দের কিছু হেরফের করে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যাবে না। তিনি বলেন, এই বাজেট দিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন করা যাবে না। গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থাও গড়ে তোলা যাবে না। তিনি স্বাস্থ্য বাজেটকে কমপক্ষে তিনগুণ বৃদ্ধি করে সমগ্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খোল-নলচে পাল্টানোর দাবি জানান। তিনি সকল বেসরকারী হাসপাতালকে সরকারী তদারকির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। তিনি আগামী ৬ মাসের জন্য ৮ কোটি মানুষের কাছে খাদ্য ও নগদ অর্থ পেীঁছানোর দাবি জানান। তিনি রাজস্ব ব্যয় হ্রাস, অনুৎপাদনশীল খাতের বরাদ্দ কমিয়ে এবং এমপিদের ইচ্ছা পূরণের বাজেট বাতিল করে সমগ্র অর্থ মহামারী মোকাবেলায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি কৃষি ও গ্রামীণ খাতে সর্বোচ্চ মনোযোগ ও বরাদ্দের দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের লজ্জাজনক ব্যর্থতায় দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে যার যার অবস্থান থেকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাইফুল ইসলাম, অরবিন্দু বেপারী বিন্দু, কেন্দ্রীয় সংগঠক মোজাম্মেল হক, আবুল কালাম, পার্টির মহানগর নেতা জোনায়েদ হোসেন, ডা মনোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম নেওয়াজ, বিলকিস বেগম প্রমুখ।
বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশ শেষে তোপখানা রোড, পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে সচিবালয়ের সম্মুখে পুলিশী বাধার সম্মুখীন হয়। এখানে পুলিশী বাধার মুখে বিক্ষোভে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খান বক্তব্য রাখেন। বিক্ষোভে সাইফুল হক অবিলম্বে দায়িত্বহীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার দাবি জানান।