শনিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » দুনিয়ায় যতদিন শ্রেণী শোষণ আর নিপীড়ন থাকবে ততদিন শ্রমজীবীদের বিপ্লবেরও প্রয়োজন থাকবে
দুনিয়ায় যতদিন শ্রেণী শোষণ আর নিপীড়ন থাকবে ততদিন শ্রমজীবীদের বিপ্লবেরও প্রয়োজন থাকবে
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, দুনিয়ায় যতদিন শ্রেণীশোষণ আর শ্রেণী নিপীড়ন থাকবে ততদিন শ্রমজীবী - মেহনতি মানুষের বিপ্লবেরও প্রয়োজন হবে ; পুঁজিবাদের নিষ্ঠুর অমানবিক নির্যাতন- নিপীড়নের বিরুদ্ধে এযুগের আগুয়ান বিপ্লবী শ্রেণী- শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে রাষ্ট্র - বিপ্লবও দরকার হবে।এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণী কেবল শোষণ- বঞ্চনা থেকে নিজেকে মুক্ত করবে না,তারা মুক্ত করবে নির্যাতিত - নিপীড়িত - শেষিত - অবদমিত সমাজের সকল অংশকে, তারা মুক্ত করবে অবরুদ্ধ অচলায়তনের গোটা সমাজকে।এই বিপ্লবী পরিবর্তন হবে এক নতুন সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে। তিনি বলেন, দুনিয়া জুড়ে করোনা মহামারী আরো একবার প্রমাণ করেছে যে,নিছক মুনাফাকেন্দ্রীক অমানবিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মানুষের জীবন ও তার মানবিক বিকাশ কোনভাবেই নিরাপদ নয়।তিনি বলেন,ধনতান্ত্রিক উন্নয়ন মডেল কেবল মুনাফা বোঝে,মানুষ বোঝে না।মানুষ তার কাছে উৎপাদনের একটি উপকরণ মাত্র।
তিনি ফরাসি দেশের প্যারিসে শ্রমজীবী - মেহনতি মানুষ প্যারী কমিউনের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষের সাম্যভিত্তিক প্রথম রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করেছিল।তিনি বলেন, ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব ছিল এই শ্রমিক অভ্যূত্থানের সফল বাস্তবায়ন। আজ ১৫০ বছর পরও প্যারী কমিউন বিশ্বের তাবত শ্রমজীবী - মেহনতিদের অধিকার আর মুক্তি অর্জনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
ঐতিহাসিক প্যারি কমিউনের ১৫০ বছর উপলক্ষে আজ বিকালে তার লিখিত “প্যারী কমিউনের ১৫০ বছর- তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা” শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বইয়ের উপর আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে কালের দাবি প্রকাশনার প্রধান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নেত্রী বহ্নিশিখা জামালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ মির্যা মাসুদ হাসান, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রমিকনেতা রাজেকুজ্জামান রতন, লেখক - গবেষক ওমর তারেক চৌধুরী, আলতাফ পারভেজ, অনিন্দ্য আরিফ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ অভিনু কিবরিয়া ইসলাম।
আলোচনা সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বলেন, প্যারী কমিউন মাত্র ৭২ দিন টিকে থাকতে পারলেও তা নিজেকে পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসাবে হাজির করেছিল।বস্তুতঃ প্যারী কমিউন ছিল রুশ বিপ্লবেরই এক অসাধারণ রিহার্সাল। তারা বলেন,প্যারী কমিউন প্রতিনিধিত্বশীল ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সমাজতান্ত্রিক গনতন্ত্রেরও এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।
তারা বলেন, প্যারী কমিউন পরবর্তী গত দেড়শত বছরে শ্রমিকশ্রেণীর গঠন ও চরিত্রে অনেক নতুন বৈশিষ্ট যুক্ত হলেও মানব সভ্যতা বিকাশে শ্রমিকশ্রেণীই এখনও প্রধান ভরসা।তারা বলেন,এই শ্রমজীবী - মেহনতিরাই একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুনিয়ার দেশে দেশে নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে রাষ্ট্র - বিপ্লবের কাজ এগিয়ে নেবে, শ্রমিকশ্রেণীসহ মানুষের জীবন, তাদের অধিকার ও মুক্তি নিশ্চিত করবে।
মুক্ত আলোচনায় অনেকে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কালের দাবি প্রকাশনার আকবর খান।
প্যারী কমিউনের মধ্যে দিয়ে তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।