শনিবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » আর্মি রেটে সারাদেশে রেশনিং চালু করতে হবে
আর্মি রেটে সারাদেশে রেশনিং চালু করতে হবে
আজ সকাল ১১টায় কৃষক খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনার এই মহামারী মোকাবেলায় সরকার পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মাইকিং করে গণটিকা দেওয়ার নামে উল্টো সাধারণ মানুষকে গণহয়রানি করছে। টিকা কেন্দ্রে হাজার হাজার মানুষকে জড়ো করে টিকা না দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে চাল, ডাল, তেল, লবন, পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের কার্যকারী বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ী সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম এই মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। সরকারের খোলা বাজারে চালসহ টিসিবি পণ্য বিক্রয়কেন্দ্র না থাকায় শ্রমজীবী, নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষ চরম দিশেহারা।
নেতৃবৃন্দ বলেন উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা কবলিত হয়েছে। বন্যা কবলিত অঞ্চলের মানুষজন ফসলি এবং ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব থেকে আরো নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নতুন করে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে গেছে। বন্যা, করোনা মহামারীতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ছয় কোটি দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। প্রণোদনার নামে যে সকল বরাদ্দ এবং গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তার যে প্রকল্প বিদ্যমান আছে তার কোন সুফল গ্রামীণ শ্রমজীবী প্রান্তিক কৃষক- খেতমজুর, ভূমিহীন নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে পৌছায়নি। সরকার দলীয় লোকজন এবং এই সকল অর্থ বরাদ্দের দায়িত্বে থাকা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে অধিকাংশই প্রকৃত অভাবী মানুষের কাছে পৌছাতে পারেনি।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, একদিকে করোনা- ডেঙ্গু, অপরদিকে বন্যা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, এইসব মিলিয়ে গ্রামীণ শ্রমজীবী প্রান্তিক কৃষক খেতমজুর, ভুমিহীন, নিম্নআয়ের মানুষ খেয়ে পরে স্বাভাবিকভাবে জীবন বাঁচাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নেতৃবৃন্দ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন যে, অনতিবিলম্বে দেশের কৃষক খেতমজুর ও গ্রামীণ শ্রমজীবীদের করোনা প্রতিরোধ টিকা প্রদান করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অসাধু সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সারাদেশে আর্মিদের রেশনিং এর মতো রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বন্যা কবলিত অঞ্চলে অনতিবিলম্বে পর্যাপ্ত খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণ করতে হবে। কৃষি প্রাণ, এনজিও ঋণ মওকুফ করে নতুন করে আবাদ করার জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান করতে হবে। কৃষকের উৎপাদিত আখ, পাট শিল্প রক্ষার জন্য বন্ধ পাটকল, চিনিকল খুলে দিতে হবে। পাটকল চিনিকল বন্ধ করে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে ধ্বংসের অপতৎপরতা রোধ করতে হবে। এই সকল দাবী আদায়ের জন্য আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত এই পনেরদিন দাবী আদায় পক্ষ ঘোষণা করে ঢাকাসহ জেলা/উপজেলায় হাটসভা, পথসভা, বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ সকাল ১১টায় ২৭/৮-এ তোপখানা রোড সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষক খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক, খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকবর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন খেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, অর্নব সরকার, সমাজতান্ত্রিক খেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সভাপতি বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ কৃষক খেতমজুর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশ খেতমজুর ও কৃষক সংগঠন এর কেন্দ্রীয় নেতা আ.ক.ম জহিরুল ইসলাম, কৃষক সমিতির সুকান্ত শফি চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষক ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ, নিখিল দাস, বিধান দাস প্রমুখ।