মঙ্গলবার ● ১৩ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » ছবিঘর » সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দরকার মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য আরেকটি গণজাগরণ : সাইফুল হক
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দরকার মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য আরেকটি গণজাগরণ : সাইফুল হক
ঢাকা :: বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত “স্বাধীনতার আদেশ ঘোষণা” দলিল মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের রাজনৈতিক, আইনগত ও নৈতিক ভিত্তি নিশ্চিত করে। নবগঠিত সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথও প্রশস্ত করে। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদের হীনমন্যতার কারণে তাজউদ্দিন আহমেদ এর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারকে উপযুক্ত স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেয়নি। যুগান্তকারী এই দলিল সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দিশাও নির্ধারণ করে দেয়; দেশের চলার পথ হিসাবে “সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার” প্রতিষ্ঠা করাকে পরম লক্ষ্য হিসাবে নির্দিষ্ট করে দেয়। বস্তুত: এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিপাগল এই দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাংখারই প্রতিফলন ঘটে।
তিনি বলেন, পরিতাপের বিষয় গত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশকে এই ঘোষনার বিপরীতেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাম্যের পরিবর্তে মারাত্মক অসাম্য সৃষ্টি হয়েছে; মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক ন্যায়বিচার অস্বীকৃত। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে দেশে আজ চরম কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ধারায় সরকার পরিবর্তনের সুযোগ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চরম দক্ষিণপন্থী ধর্মান্ধ ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের রাস্তা তৈরী হয়েছে। তিনি বলেন, অবরুদ্ধ এই পরিস্থিতিতে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে গভীর খাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের সমুতুল্য আরেকটি গণজাগরণ-গণঅভ্যুত্থান। আর এই পথেই অধিকার ও ইনসাফ নিশ্চিত করতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে তিনি সকল গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আজ ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস উপলক্ষ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে সেগুনবাগিচার সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতি হিসাবে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি আব্দুন নূর ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন অর রশীদ, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ইফতেখার আহমেদ বাবু, অনলাইনে যুক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডঃ এম. আখতারুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গবেষক চারু হক প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ। জনগণই এই যুদ্ধের প্রধান নায়ক। সরকার সংকীর্ণতা ও হীনমন্যতার কারণে মওলানা ভাসানী, মনিসিংহ, মোজাফ্ফর আহমেদসহ মুক্তিযুদ্ধের অগ্রণী নেতা ও বীরদের যথাযথ সম্মান দেখাচ্ছে না। প্রবাসী মুজিববনগর সরকারের ভূমিকাকেও তারা খাটো করছে।
আবদুর নুর বলেন, সরকার স্বাধীনতার মৌল চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করে গোটা দেশ ও জনগণকে আজ বিপদে ফেলে দিয়েছে। তিনি এই অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।