সোমবার ● ৯ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » মেননের নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নেতা-কর্মীদের গণপদত্যাগ
মেননের নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নেতা-কর্মীদের গণপদত্যাগ
বগুড়া :: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে গণপদত্যাগ করেছেন দলটির বগুড়া জেলার শত শত নেতাকর্মী। ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারী মুক্তি সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড সালেহা সুলতানার নেতৃত্বে তারা এই গণপদত্যাগ করেন। আজ সোমবার ৯ নভেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন গণপদত্যাগকারী নেতা-কর্মীরা।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে শ্রেণি সংগ্রাম ও বিপ্লবের পথ থেকে সরে বুর্জোয়া লেজুরবৃত্তি, পার্টি সংগঠনকে অর্ধ:পতিত করা এবং দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়ে সুবিধাবাদী চক্র গড়ে তোলায় তারা পদত্যাগ করেছেন।
গণপদত্যাগকারী নেতারা জানিয়েছেন, জনজীবন ও জানমালের নিরাপত্তার সংকটে মানুষ যখন অতিষ্ঠ তখন ওয়ার্কার্স পার্টির কোনো ভূমিকা নেই। তারা বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তিতে ব্যস্ত।
পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন স্ত্রীকে সংরক্ষিত আসনে এমপি করার অভিযোগ তুলে তারা বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টিতে অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নারী নেতৃত্ব থাকার পরও পার্টির সভাপতির স্ত্রীকে সংসদ সদস্য বানানো হয়েছে। এখানে আর গণতান্ত্রিক পরিবেশ বলে কিছু নেই। আন্ত:পার্টি সংগ্রামের মাধ্যমে পরিবর্তন করার মত কোনো পরিবেশ নাই। কমিউনিস্ট চরিত্র পার্টি নেতারা বিপ্লব ও শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।
কেন্দ্রীয় ও বগুড়া জেলা নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা মানুষের মুক্তি ও শোষণহীন সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই পার্টির সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম।
ওয়াকার্স পার্টি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় হয় না উল্লেখ করে তারা বলেন, গঠনতন্ত্র ছাড়াই বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক কমিটিকে না জানিয়ে পার্টির সদস্যপদ প্রদান করেন। জেলা পার্টির কার্য্যালয়ের জন্য পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক পাঠানো ২ লক্ষ টাকার হিসাব দেয়নি। আর এ বিষয়ে কেন্দ্রকে জানানোর পরও তার বিষয় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
গণপদত্যাগকারী নেতারা আরো বলেন, গত বছরের ১৩ অক্টোবর জেলা বর্ধিত সভায় জেলা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কেন্দ্র থেকে জেলা ইনচার্জের পরামর্শে জেলা সাধারণ সম্পাদক এককভাবে জেলা সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করেন। জেলা সম্মেলনে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উপস্থিত থাকার পরেও সাধারণ সম্পাদক নিজেকে সম্মেলনের সভাপতি ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর পরেও সম্মেলনের প্রধান অতিথি ও জেলা ইনচার্জ পরিবেশ ও শৃংখলা বজায় রাখার আহবান জানান। প্রধান অতিথি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা সম্মেলন বর্জন করি এবং সম্মেলনে উপস্থিত নেতা কর্মিদের অংশগ্রহনে কেন্দ্রীয় নেতা সালেহা সুলতানার নেতৃত্বে আলাদা কাউন্সিলের মাধ্যমে শহিদুল ইসলামকে সভাপতি, এনামুল হক বাবলুকে সা. সম্পাদক করে বগুড়া জেলা কমিটি গঠন করি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড সালেহা সুলতানা জানান, জেলা সম্মেলনে জেলা ইনচার্জের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন হয়। ২০১৯ সালের ২৬-২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এবং ওই বছরের ২-৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পর্টির দশম কংগ্রেসে পাটির সভাপতি ঘোষণা করেন কংগ্রেসের পরে বগুড়া জেলা পাটিকে একিভূত করার উদ্দোগ গ্রহণ করা হবে। কিন্তু আজো তা করা হয়নি। তাই বুর্জোয়াদের লেজুড়বৃত্তিকারী এই পার্টি থেকে আমরা গণপত্যাগ করেছি।
বিবৃতির স্বাক্ষরদাতারা জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পাটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারী মুক্তি সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালেহা সুলতানা, ওয়ার্কার্স পার্টির বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাবলুর নেতৃত্বে ২১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি। ৯৩ জন পার্টি সদস্য, ১৫৫ জন প্রার্থী সদস্য, প্রায় ৫০০০ নারী সদস্য, ৪০০০ শ্রমিক সদস্যসহ পার্টির সদস্য সভ্য এবং সাংগঠনিক পদসহ বিভন্ন গণসংগঠন থেকে তারা একযোগে পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগকারিদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারী মুক্তি সংসদরে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সালেহা সুলতানা, ওয়ার্কার্স পাটি বগুড়া জেলা কমিটির (কাংশের) সভাপতি সহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বাবলু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্র মৈত্রীর সাবেক সহ-সভাপতি শ্লোগান কণ্যা শামীমা সুলতানা শাওন, কেন্দ্রীয় নেত্রী ফেরদৌসী মীর, জেলা খেতমজুর ইউনিয়ন সভাপতি বেলাল আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী’র বগুড়া জেলা সভাপতি সহিদুল ইসলাম সোহেল প্রমুখ।