বুধবার ● ৪ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » পাদুকা শ্রমিকদের বাঁচার মত মজুরী নির্ধারণ করুন : সাইফুল হক
পাদুকা শ্রমিকদের বাঁচার মত মজুরী নির্ধারণ করুন : সাইফুল হক
ঢাকা :: আজ বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ করোনা দুর্যোগকালীন সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাদুকা শিল্প ও পাদুকা শ্রমিকদের জন্য সরকারী আর্থিক প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন এবং বলেছেন সরকারি সহযোগিতা পেলে পাদুকা শিল্প গার্মেন্টস ও ঔষধ শিল্পের মত জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে। নতুন করে ২০/২২ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবে। তারা বলেন, করোনা দুর্যোগে এই শিল্পও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মহামারীজনীত লকডাউনের কারণে ইতিমধ্যে অসংখ্য কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে পুঁজির সংকট। অধিকাংশ মানুষকেই এই সময়কালে তাদের স্বল্পপুঁজি ভেঙ্গে খেতে হয়েছে; কয়েক লক্ষাধিক পাদুকা শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে; তাদেরকে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। অনেক শ্রমিক পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। পাদুকা শিল্পে এখনও শ্রমিকদের বাঁচার মত ন্যায্য মুজরী নেই; নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নেই; নেই নিরাপদ ও উপযুক্ত কর্মপরিবেশ। সম্প্রতি পাদুকা শ্রমিকদের জন্য ৭,১০০/- টাকা ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ করা হয়েছে যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকারসমূহ এখনও অস্বীকৃত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আংগুর মিয়া, সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মো. রিয়েল, সংগঠনের উপদেষ্টা বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, উপযক্ত নীতি, পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ না থাকায় এই বছরও কোরবানির লক্ষ লক্ষ চামড়া নষ্ট হয়েছে, চামড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, উপযুক্ত নীতি ও পদক্ষেপ থাকলে চামড়া ও চামড়াজাত বহুমুখী পণ্য রফতানী করে জাতীয় প্রবৃদ্ধি ও জাতীয় আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। তিনি পাদুকা শিল্পকে ‘জাতীয় শিল্প’ হিসাবে ঘোষণা করে এই শিল্পের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখারও আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে পাদুকা শিল্প ও পাদুকা শ্রমিকদের উন্নয়নে নেতৃবৃন্দ নিম্নোক্ত ৮ দফা দাবি পেশ করেন।
আশু জরুরী দাবিসমূহ:-
১. পাদুকা শিল্পকে ‘জাতীয় শিল্প’ হিসাবে ঘোষণা দিয়ে পাদুকা শিল্পের জন্য আলাদা শিল্পনগরী স্থাপন করতে হবে। পাদুকা শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা ও অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
২. চামড়াকে জাতীয় সম্পদ হিসাবে গণ্য করে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য, সংরক্ষণ, চামড়াজাত বহুমুখী পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. বিদেশী জুতা আমদানী বন্ধ করতে হবে। জুতা তৈরীর কাঁচামাল ও পণ্যের উপর ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। জুতা রপ্তানীর ক্ষেত্রে উৎপাদকদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে। ছোট উদ্যোক্তারাও যাতে এই সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় পাদুকা শিল্প ও পাদুকা শ্রমিকদেরকে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। পাদুকা শিল্পের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদেরকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করতে হবে। জাতীয় বাজেটে পাদুকা শিল্প ও শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য থোক বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
৫. পাদুকা শ্রমিকদের সারাবছর কাজ ও বাঁচার মত ন্যায্য মজুরী দিতে হবে।
৬. পাদুকা শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে।
৭. পাদুকা শিল্পে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. পাদুকা শিল্পের বিকাশ ও শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য সরকারকে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও পাদুকা শ্রমিকদের প্রকৃত প্রতিনিধিও রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
কর্মসূচি: ৮ দফা বাস্তবায়নে ৯ নভেম্বর বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবের সম্মুখে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।