সোমবার ● ১০ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » গ্রামীণ জীবন » মোনোঘর স্কুলে একটি এসএসসি’র প্রশংসাপত্রের দাম ১৪শত টাকা
মোনোঘর স্কুলে একটি এসএসসি’র প্রশংসাপত্রের দাম ১৪শত টাকা
রাঙামাটি :: দেশের যে কোন স্কুলে ১টি টেষ্টিমোনিয়াল বা প্রশংসাপত্রের জন্য ৫০-১শত টাকা নেয়া হয়।
রাঙামাটি শহরের রাঙ্গাপানি এলাকায় অবস্থিত মোনোঘর অনাথ আশ্রমের অধিনে ছাত্রছাত্রীদের টেষ্টিমোনিয়াল বা প্রশংসাপত্র বিক্রিতে এবছর রেকর্ড করেছে মোনোঘর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল। ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে মোনোঘর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে ভর্তির জন্য স্কুলের টেষ্টিমোনিয়াল বা প্রশংসাপত্র নিতে ১ হাজার ৪ শত টাকা ধার্য্য করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। গলাকাটা এ ফি আদায়ে সরকারের শিক্ষা বিভাগের কোন ভুমিকা নেই বলেও জানা যায়।
জানা গেছে, এবার মোনোঘর অনাথ আশ্রমের অধিনে মোনোঘর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ২৭৮ জন এসএসসি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে তন্মমধ্যে ৫৯ জন অকৃকার্য বা ফেল করে বাকি ২১৯ জন ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তির জন্য স্কুলের টেষ্টিমোনিয়াল বা প্রশংসাপত্র নিতে ১ হাজার ৪ শত পরিশোধ করিতে হচ্ছে।
মোনোঘর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল কর্তৃপক্ষ টেষ্টিমোনিয়াল বা প্রশংসাপত্র বিক্রয় করে এবছর ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা আয় করছেন ।
একটি প্রশংসাপত্রের জন্য এত টাকা ফি নির্ধারন হওয়ায় প্রতন্ত এলাকার গরীব পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীরা পরেছেন মহাবিপদে।
বৈশি^ক করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে উপার্জনহীন কর্মহীন পরিবারগুলোর এমনিতেই কলেজে ভর্তির ফি যোগাড় করা অসাধ্য হয়ে পরেছে তার উপর স্কুলের একটি প্রশংসাপত্রের দাম ১ হাজার ৪ শত টাকা, পার্বত্য অঞ্চলের গরীব খেটে খাওয়া পরিবারের সন্তানদের জন্য যেন আকাশ ভেঙে কপালে পরেছে।
একটি প্রশংসাপত্রের জন্য গরীবের গলাকাটা ফি নির্ধারন বিষয়ে জানতে চাইলে মোনোঘর রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঝিমিত ঝিমিত চাকমা সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, মোনঘর স্কুল ট্রাষ্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, আমাদের স্কুল বা প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত নয়। ফলে শিক্ষকের প্রনোদনা ২ শত টাকা, শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলে চিকিৎসা তহবিলে ২ শত টাকা এবং উন্নয়ন খ্যাতে শিক্ষকের বেতন দেওয়ার জন্য ১ হাজার টাকা, মোট ১ হাজার ৪শত প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। এটা গত তিন বছর ধরে এভাবে নেওয়া হচ্ছে। এখানে প্রশংসাপত্র মুখ্য নয়, ছাত্রছাত্রীদের অভিবাবকদেরও মিটিংয়ের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ট্রাষ্টি বোর্ডেরও অনুমতি রয়েছে। তবে যারা নিতান্তই দিতে পারবেনা তাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেয়া হচ্ছেনা বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন একজন নতুন ছাত্র ভর্তি হতে হলে মাথাপিছু ৬ হাজার একশত টাকা, মোনোঘর হোষ্টেলে অবস্থান করলে প্রতিমাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮ শত ৫০ টাকা প্রয়োজন হয়। বর্তমানে ৯০জন শিক্ষার্থীর খরচ সরকারি ভাবে সমাজ কল্যাণ বিভাগ থেকে বহন করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন চাকমা সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি, ১ হাজার ৪ শত টাকা নিচ্ছে এটা সত্য, তারা বলছে এটা ট্রাষ্টি বোর্ডের সিদ্ধান্ত। ম্যানেজিং কমিটি বা ট্রাষ্টি বোর্ডের সিদ্ধান্ত হলে তো আমাদের কিছু করার নাই। বর্তমানে সরকার থেকে যে সুবিধা পায় ২০২২ সালের পর তার আওতায় থাকবেনা বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এবিষয়ে রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ জোহরা উপমা বলেন আমি বিষয়টা দেখছি, আমি তাদের সাথে কথা বলবো ।