সোমবার ● ২৭ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » ছবিঘর » ছয় মাস পার হবার পরেও স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা দূর হয়নি বাম জোটের সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক
ছয় মাস পার হবার পরেও স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা দূর হয়নি বাম জোটের সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক
ঢাকা :: আজ ২৭ জুলাই সোমবার দুপুরে ২নং পুরানা পল্টনস্থ মৈত্রী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতা বিপ্লবী ওয়ারকারস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন
করোনা মোকাবেলায় সীমাহীন ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকার এখন বন্যা পরিস্থিতিতে জনগণকে রক্ষায়ও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ছয় মাস পার হবার পরেও স্বাস্থ্যখাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা দূর হয়নি। করোনা সংক্রমণ যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে,যে কারণে বহুমুখী হয়রানি,খরছ আর একঘরে হবার ভয়ে মানুষ এখন করোনা টেস্ট করাতে আতংকে পরিনত হয়েছে। এইভাবে কোন দেশ চলতে পারে না। এই অবস্থায় দেশ ও জনগণকে রক্ষায় বাম জোটের নেতা কর্মীদেরকে ঝুঁকি নিয়েই রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে।
করোনা মহামারীতে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা, দুর্নীতি-লুটপাট-অব্যবস্থাপনা-সমন্বয়হীনতা, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণ বিতরণে অপর্যাপ্ততা, রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ, শ্রমিক ছাঁটাই, কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, জননিরাপত্তা, বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনসহ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় সম্পর্কে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে সোমবার দুপুর ১২টায় ২নং পুরানা পল্টনস্থ মৈত্রী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক বাচ্চু ভূইয়া। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি’র কাফী রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, ইউসিএলবি’র নজরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নন্মোক্ত ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় এবং ঈদের পরে এইসকল দাবিসহ সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় কনভেনশনের মাধ্যমে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
১. করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবিলম্বে অপসারণ ও শাস্তি দিতে হবে।
২. স্বাস্থ্যখাতের ঠিকাদার- মিঠুসহ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও তার হোতাদের গ্রেপ্তার বিচার করতে হবে।
৩. করোনা টেস্টের ফি বাতিল করতে হবে। প্রতি জেলায় করোনা টেস্টের ল্যাব প্রতিষ্ঠা ও সকল নাগরিকের করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা বিনামূল্যে করতে হবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে, বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করে করোনা চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।
৪. বন্যার্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করতে হবে।
৫. রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। বন্ধ বা পিপিপি নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু রাখতে হবে।
৬. গার্মেন্টসসহ সকল প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। ঈদের আগেই সকল শ্রমিকদের বকেয়াসহ জুলাই মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করতে হবে।
৭. সাড়ে ৬ কোটি দরিদ্র, কর্মহীন মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৮. নিবর্তনমূলক কালো আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক কাজল, লেখক মোস্তাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট কিশোর, এ্যাক্টিভিস্ট দিদার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী জাহিদুর রহমান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুমমুনীরা ও খুলনার পাটকল শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম, অলিয়ার রহমানসহ সকল বন্দিদের ঈদের আগেই নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৯. ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন রুখে দাঁড়াও, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হও।
সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত ৯ দফা দাবিতে দেশের সকল বাম প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তিবর্গকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণকে রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।