সোমবার ● ২০ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » ছবিঘর » অভিযুক্ত মিশন চাকমাকে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ
অভিযুক্ত মিশন চাকমাকে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: আসামি মিশন চাকমা (৩৫) গ্রেফতার এবং বিচার এড়ানোর জন্য পলাতক থাকায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (জে. এম. শাখা) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্মারক নং-সিজেএম (জে.এম)/২০২৪-১১৪ তারিখ : ২০/০৫/২০২৪ খ্রি. অনুসারে আদেশ হয় যে,যেহেতু নিম্ন তফসিলভূক্ত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হইয়াছে এবং ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৮৭ ও ৮৮ ধারার বিধানমতে আসামির বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছে সেহেতু এ আদালতে এরূপ বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারন রহিয়াছে যে, এ আসামি গ্রেফতার এবং বিচার এড়ানোর জন্য পলাতক রহিয়াছেন বা আত্মগোপন করিয়াছেন সেহেতু ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৩৩৯ বি (১) ধারামতে নিম্ন তফসিলভূক্ত আসামিকে এ আদেশ পত্রিকায় প্রকাশের ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে অত্র আদালতে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইল। ব্যর্থতায় আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার অনুষ্ঠিত হইবে।
আসামীর নাম ও ঠিকানা : মিশন চাকমা (৩৫), পিতা-রুপায়ন চাকমা, সাং- জুরাছড়ি সদর, ডাক-জুরাছড়ি-৪৫৬০, থানা-জুরাছড়ি, জেলা-রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
মামলা নম্বর ও ধারা : সি. আর মামলা নং-৪৭৪/২০২৩, ধারা: ২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা।
স্বাক্ষরিত (মোঃ আবু হানিফ) চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
মামলা সুত্র: সি আর মামলা নং- ৪৭৪/২০২৩ সূত্রে জানা যায়, সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহায়তায় মামলার বাদিনী মেকি চাকমা (৩৫), তার স্বামী- মিশন চাকমা, মাতা- মৃত: পুষ্প মালা চাকমা, সাং- জুরাছড়ি, থানা- জুরাছড়ি, জেলা- রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ।
বাদিনীর স্বামী-মিশন চাকমা (৩৫), পিতা- রুপায়ন চাকমা, বাদিনীর শাশুড়ি যবনিকা চাকমা (৫৫) স্বামী- রুপায়ন চাকমা, উভয় সাং- জুরাছড়ি সদর, ডাক- জুরাছড়ি-৪৫৬০, থানা- জুরাছড়ি, জেলা- রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ২ জনকে আসামী করে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৩ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বাদিনীর দেয়া তথ্যমতে ০১নং আসামীর মধ্যে গত ১৩/১০/২০১৩ ইংরেজি তারিখে পারিবারিক সম্মতিক্রমে এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বৌদ্ধ বিহারে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর কিছু দিন সুখে শান্তিতে সাংসারিক জীবন যাপন করেন। বাদীনি ও ১নং আসামীর দাম্পত্য জীবনে নিউটন চাকমা যাহার বয়স আট বৎসর নামে একজন পুত্র সন্তান রহিয়াছে।
বিবাহের কিছুদিন পর থেকে ০১নং আসামী বাদীনিকে ব্যবসা করার জন্য তিন লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে বসেন এবং আসামী প্রতিনিয়ত বাদীনিকে যৌতুকের টাকার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। বাদীনির পরিবার সংসারের সুখের আশায় আসামীদ্বয়কে ব্যবসা করার জন্য ইতিপূর্বে ২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। কিন্তু উক্ত টাকা গ্রহন করার পর ০১নং আসামী কিছু দিন ভাল থাকার পরে আবার নতুন করে যৌতুক এর টাকার জন্য শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন করতে থাকেন। পরবর্তীতে বাদীনি যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় আসামীদ্বয় বাদীনিকে তাহার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেন।
কিছুদিন পর আসামীয়ে বাদীনির পিত্রালয়ে বাদীনিকে নিতে আসেন এবং দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে বাদীনির নিকট পূর্বে দাবীকৃত তিন লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে দিতে বলেন। বাদীনি ও তার পরিবার অসহায় হিসাবে যৌতুকের টাকা দিতে পারিবেন না মর্মে জানালে বাদীনিকে রেখে আসামীদ্বয় বাদীনির পিত্রালয় ত্যাগ করেন। আসামীদ্বয় ঘটনস্থল ত্যাগ করার সময় উচ্চগলায় বলিতে থাকেন যত দিন বাদীনি ও তাহার পরিবার তিন লক্ষ টাকা যৌতুক দিবেন না ততদিন বাদীনিকে শ্বশুড় বাড়ী উঠিয়ে নিবেন না ।
স্থানীয়রা আসামীদ্বয়দের অনেক করে বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আসামীদ্বয় যৌতুকের দাবীতে অনড় থাকেন। সকলের সামনে এই মর্মে হুমকী প্রদান করেন যে, যদি বাদীনি অথবা তাহার- পরিবার আসামীদ্বয়ের দাবীকৃত তিন লক্ষ টাকা আসামীকে প্রদান না করে তাহলে বেশি টাকা নিয়ে ০১নং আসামী অন্যত্র বিবাহ করাবেন মর্মে হুমকি প্রদান করেন। বাদীনি বিভিন্ন জনের নিকট ঘটনা সম্পর্কে অবগত করেন কিন্তু কোন প্রকার সুরাহা না পেয়ে গত ১৪/০৯/২০২৩ ইংরেজি তারিখে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস রাঙামাটিতে আবেদন করেন । লিগ্যাল এইড অফিস থেকে আসামীদ্বয়দের হাজির হওয়ার জন্য জ্ঞাত করা শর্তেও আসামীদ্বয় হাজির হয় নাই। বাদীনি অসহায় ও গরীব উপজাতী মহিলা হিসাবে রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ মহোদয় লিগ্যাল এইড অফিস হইতে বাদীনিকে মামলা করার অনুমতি প্রদান করেন ।
এ মামলায় বাদীনির নিরপেক্ষ ৩জন প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী রয়েছেন।
বাদীনির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের প্যানেল আইনজিবী শফিউল আলম মিঞা ।