শনিবার ● ৪ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » গণভবন থেকে রাষ্ট্রীয় পাটকলে উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা ন্যাক্কারজনক ও প্রতারণামূলক : বাম জোট
গণভবন থেকে রাষ্ট্রীয় পাটকলে উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা ন্যাক্কারজনক ও প্রতারণামূলক : বাম জোট
প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ ও জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাদিুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী কমরেড জোনায়েদ সাকি, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক কমরেড মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক আজ ৩ জুলাই ২০২০ সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে গতকাল সন্ধ্যায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মূখ্য সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকলে ১ জুলাই ২০২০ থেকে উৎপাদন বন্ধের ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজেএমসি বা পাটমন্ত্রণালয় থেকে না হয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কাম কার্যালয় থেকে পাটকল বন্ধের ঘোষণা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও শ্রমিক-জনতার সাথে প্রতারণা করা। কারণ একদিকে গত ২৯ জুন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সাথে রাষ্ট্রীয় পাটকলের সিবিএ, নন-সিবিএ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মিল চালু রেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে মর্মে আলোচনার পর যখন শ্রমিকেরা আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করে কাজে যোগ দিল তার ২ দিন পরেই প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে পাটকল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলো। এ ঘটনা সরকারের কূটকৌশল ছাড়া অন্য কিছু নয়। শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে শ্রমিকেরা আন্দোলন প্রত্যাহার করলো আর প্রধানমন্ত্রী বন্ধের ঘোষণা দিল যাতে শ্রমিকেরা পুনরায় সংঘটিত হওয়া ও আন্দোলনের সুযোগ না পায়। তাছাড়া তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের সরকার - বিএনপি জামাত জোট সরকারের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েই এবারে পাটকল বন্ধ করছে। আদমজী ৭ দিনের নোটিশে বন্ধ করেছিল এবারে কোন সময় না দিয়ে বিনা নোটিশে কারখানা বন্ধ হলো। আসলে আওয়ামী লীগ - বিএনপি মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, তারা উভয়েই লুটেরা ধনিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী দল।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী কারখানা বন্ধ করতে হলে ২ মাস পূর্বে নোটিশ দিতে হয়। রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকল বন্ধে এ নিয়ম মানা হলো না। পাট মন্ত্রণালয় বন্ধ করলে এ নিয়ম মানার বাধ্যবাধকতা ছিল তাই চালাকী করে প্রধানমন্ত্রী বন্ধ করে দিল। কারণ অলিখিতভাবে আছে আইনে যাহাই থাকুক প্রধানমন্ত্রী কোন ঘোষণা দিলে সেটাই আইনে পরিণত হবে। রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধে ভোট ডাকাত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার সেই সুযোগ কাজে লাগালো।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এমনিতেই আমাদের দেশ থেকে কাঁচা পাট ভারতে পাচার হয়ে যায়, এখন রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করে পাচারের পথকেই আরো সুগম করে দিল এবং ভারতের পাটকলকে উজ্জীবিত করতেই কি বাংলাদেশের পাটকল বন্ধ করার দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে আওয়ামী সরকার এ কাজ করলো তা দেশবাসীর কাছে এক বিরাট প্রশ্ন।
নেতৃবৃন্দ গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অবিলম্বে পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। একই সাথে সকল বাম-প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।