বৃহস্পতিবার ● ৭ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » ছবিঘর » গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার ছাড়া নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী
গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমঅধিকার ছাড়া নারীর মুক্তি নেই : বহ্নিশিখা জামালী
৮ মার্চ ২০২৪ আন্তর্জাতিক নারী দিবস এর ১১৪ তম বার্ষিকী। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে সমাজতান্ত্রিক নারীদের সম্মেলনে কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন নারীর অধিকার আর মুক্তির প্রতীক হিসাবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।তারপর থেকে ক্রমে বিশ্বব্যাপী ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস হিসাবে উজ্জাপিত হয়ে আসছে।
৮ মার্চ এর ঘোষণা ও বার্তা ছিল পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রে অর্ধেক জনগোষ্ঠী হিসাবে নারীর সম অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। এরই ধারাবাহিকতায় শ্রমঘন্টা কমিয়ে আনা,নারী - পুরুষের মধ্যে মজুরি বৈষম্য বিলোপ, নারীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা, সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিশ্চিত করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা প্রভৃতি দাবিসমূহ সামনে চলে আসে।
কালক্রমে নারীর উপর শ্রেণী শোষণের পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক শোশণ - নিপীড়নের প্রশ্নও বড় হয়ে দেখা দেয়।পরিবার ও সমাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য, নারীর শরীর - নারীর সিদ্ধান্ত, সর্বস্তরে নারীর সম প্রতিনিধিত্ব প্রভৃতি নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনোযোগের অগ্রাধিকারে উঠে আসে।
সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহে অধিকার ও মুক্তির দিক থেকে নারীর বিস্ময়কর উল্লম্ফন ঘঠেছিল।কিন্তু সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয়ের হাত ধরে নানাভাবে এই অধিকার ও মুক্তি খর্ব হতে থাকে।পুঁজিতন্ত্র ও পুঁজিতান্ত্রিক ভোগবাদী অপসংস্কৃতি কেবল সস্তা নারীশ্রমকে নয়,খোদ
নারীদেহকেই আজ পণ্যে পরিনত করেছে।
এই একবিংশ শতাব্দীতে নারীর সমঅধিকার, সমমর্যাদা ও মুক্তির প্রশ্নকে আরও গভীর ও জটিল করে তুলেছে; হাজির করেছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে এসবের সাথে বাডতি যুক্ত হয়েছে নারীর ভোটের অধিকার অধিকার, পশ্চাৎপদ কূপমন্ডুক সংস্কৃতি, নারী অধিকার ও মর্যাদা বিরোধী সংঘটিত প্রচারণা, নিরাপত্তার মত গুরুতর প্রশ্নসমূহ।
বাংলাদেশে সামাজিক অগ্রগতির সূচকে উপরসা নারীর কিছু অগ্রগতি হয়েছে; কিন্তু তার শিকড় দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন। গোড়ায় রয়েছে বিরাট গলদ।শ্রেণী শোষণ নিপীড়নের পাশাপাশি রয়েছে প্রায় মধ্যযুগীয় শত ধরনের পুরুষতান্ত্রিক শোষণ আর দমন,অবদমন আর অত্যাচার - নিপীড়ন।
ফলে নারীর লড়াইটা বহুমাত্রিক ও দীর্ঘ। নারীর এই লড়াই কবে শেষ হবে বলা মুশকিল। তবে লড়তে লড়তেই নারীকে জিততে হবে; নিশ্চিত করতে হবে তার গণতান্ত্রিক অধিকার আর মানবিক মুক্তি। এই লড়াইয়ে নারী একেবারে একা নয়- এটাই ভরসা।
৮ মার্চ ২০২৪