রবিবার ● ১১ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » ছবিঘর » হামলা আক্রমণের প্রতিবাদে আগামীকাল বিক্ষোভ সমাবেশ
হামলা আক্রমণের প্রতিবাদে আগামীকাল বিক্ষোভ সমাবেশ
আজ সকালে তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতংকে ভুগছে; দিন দিন তারা বেসামাল হয়ে পড়ছে। গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দল থেকে তারা এখন নিপীড়নমূলক সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিনত হচ্ছে।গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা - দিনাজপুর রোডমার্চে বিভিন্ন জেলায় তারা যেভাবে হামলা চালিয়েছে, শান্তি সমাবেশের নামে উসকানি সৃষ্টি করেছে তা কেবল তাদের স্বৈরতান্ত্রিক গণবিরোধী চরিত্রকেই তুলে ধরেছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের ৪ জুন থেকে ৭ জুন ২০২৩ ঢাকা থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত রোড়মার্চ এর অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন আহবান করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্য এর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামালউদ্দিন পাটোয়ারী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী ও আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন ও হাসিব উদ্দিন হোসেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের নেতা কাজী নজরুল প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, রোডমার্চ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হলেও সরকার ও সরকারি দল অধিকাংশ ক্ষেত্রে উসকানিমূলক পালটা ভুমিকা গ্রহণ করেছে।টাংগাইলে আমাদের সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ কথিত শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিল।যে হোটেলে দুপুরে আমাদের খাবার ব্যবস্থা ছিল তাদেরকে হুমকি দিয়ে খাবারের ব্যবস্থা ভন্ডুল করে দিয়েছিল।টাংগাইল শহরে কোথাও যাতে আমরা সমাবেশ করতে না পারি তার জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বিরাট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছিল। সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর মাজারে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়েও ছাত্রলীগ মাস্তানী করার চেষ্টা করেছিল।
সিরাজগঞ্জ শহরের কোথাও আমাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি।রোড়মার্চকারীরা যাতে শহরের হোটেলগুলোতে থাকতে না পারে তার জন্য হোটেলগুলোকে প্রশাসন থেকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল।আর আমাদেরকে সমাবেশ করতে হয়েছে শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হাটিকুমডুলে তপ্ত বালির মাঠে।
তিনি বলেন, বগুড়ার মোকামতলার সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ পালটা শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করলে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করা হয়, যেখানে আমাদের সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।এই সমাবেশেও পুলিশের উপস্থিতিতে সরকার দলীয়রা নানা ধরনের উসকানি সৃষ্টি করে। মোকামতলার এই সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় রাতযাপনের জন্য বগুড়া শহরে ফেরার সময় রোড়মার্চের গাড়িবহরে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা করে।এই হামলায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য ওসমান আলী ও গাড়ির ড্রাইভার শরীফ উদ্দিন শওকত আহত হন। আমাদের একটি মাইক্রোবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাতে বগুড়ায় আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে আমজাদিয়া মোটেলে অবস্থানরত গণতন্ত্র মঞ্চের সংগঠকদের উপর সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা আবার হামলা করে।এই হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তরিকুল সুজন, ছাত্র ফেডারেশনের নেতা রাইদুল ইসলাম সাকিব, সৌরভ সেন সহ কয়েকজন।
বস্তুতঃ বগুড়ায় তারা এক ধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।বগুড়ায় সমাবেশের জন্য প্রথমে সাতমাথা অনুমোদন দেয়া হয়।আওয়ামী লীগ পরে একইস্থানে শান্তি সমাবেশ ডাকলে সমাবেশ খোকন পার্কে সরিয়ে নেওয়া হয়।এখানেও তারা উসকানিমূলকভাবে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করে। পরে প্রশাসন বগুড়া সেন্ট্রাল স্কুল মাঠে সমাবেশ করতে বলে।সংঘাত এড়াতে আমরা ওখানে সমাবেশ করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি।
গোবিন্দগঞ্জ শহীদ মিনারে আমাদের পূর্বনির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করতে না দিয়ে বিস্ময়করভাবে শহর থেকে ৬/৭ কিলোমিটার দূরে বিলের ধানক্ষেতে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।আমরা ওখানেই সমাবেশ করি।
রংপুরে প্রেসক্লাবের সামনে রোড়মার্চের সমাপনী সমাবেশের মঞ্চ ভেংগে দেয় পুলিশ এবং সমাবেশ ঘিরে নানা উত্তেজনা তৈরি করে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও সরকারি দলের এতসব বাধা, হামলা, আক্রমণ, উসকানি ও ত্রাস সৃষ্টির পরেও রোড়মার্চের পথে পথে আমরা মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন, সহযোগিতা ও ভালবাসা পেয়েছি। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে সমাবেশগুলোতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে ; বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন অবসানে তারা তাদের মরীয়া লড়াইয়ের মনোভাবের বার্তা দিয়েছে। মানুষ অনতিবিলম্বে দূর্নীতিবাজ, গণবিরোধী, ভোটের অধিকার হরনকারী গায়ের জোরে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকা এই সরকারের কবল থেকে মুক্তি চায়। জনগণ কোনভাবেই আর এই সরকারকে নিতে পারছেনা। মানুষ যে এবার সত্যিকারের একটা পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে তাও স্পষ্ট বোঝা গেছে।
তিনি গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত কর্মসূচী ঘোষণা করেছি-
ক। রোড়মার্চে বাধা ও হামলা - আক্রমণের প্রতিবাদে আগামীকাল ১২ জুন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সমাবেশ - বিক্ষোভ। ঢাকায় বেলা ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিক্ষোভ সমাবেশ।
খ।অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানের দাবিতে ১৯ জুন বেলা ১১ টায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ।